মে ৬, ২০২৪

আবারও পারমাণবিক পরীক্ষার দিকে এগোচ্ছে উত্তর কোরিয়া। কারণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন মনে করেন, পারমাণবিক অস্ত্রাগার প্রতিষ্ঠা করা গেলে কেবল সেটিই নিজের শাসন টিকিয়ে রাখার নিশ্চয়তা দিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এসেছে বলে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ‘সম্ভবত’ আবার একটি পারমাণবিক ডিভাইস পরীক্ষা করবেন। কারণ পারমাণবিক অস্ত্রাগার প্রতিষ্ঠাই নিজের শাসনের ‘চূড়ান্ত গ্যারান্টার’ বা নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে বলে মনে করেন কিম।

এএফপি বলছে, ‘২০২৩ অ্যানুয়াল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট’ বা ২০২৩ সালের বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন বিষয়ক মার্কিন ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে স্বাভাবিকীকরণে কিম পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা চালিয়ে যাবেন এমন সম্ভাবনা রয়েছে।’

উত্তর কোরিয়া ২০০৬ সাল থেকে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। এসব পরীক্ষার প্রতিটিতেই আগেরটির তুলনায় বিস্ফোরণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির শেষ পারমাণবিক পরীক্ষা ছিল ২০১৭ সালে।

জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের অফিসের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘উত্তর কোরিয়া সম্ভবত তার সামরিক আধুনিকীকরণ লক্ষ্যগুলোকে এগিয়ে নিতে একটি পারমাণবিক ডিভাইস পরীক্ষা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘কিম প্রায় নিশ্চিতভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র ও আইসিবিএমকে তার স্বৈরাচারী শাসনের চূড়ান্ত গ্যারান্টার হিসাবে দেখেন এবং এসব প্রোগ্রাম পরিত্যাগ করার কোনও ইচ্ছা তার নেই। কারণ কিম বিশ্বাস করেন যে, সময়ের সাথে সাথে পারমাণবিক শক্তি হিসাবে তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করবেন।’

মার্কিন এই রিপোর্ট বলছে, ‘উত্তর কোরিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরিসহ অপরাধমূলক নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে করা আয় থেকে আংশিকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচিতে অর্থায়ন করে থাকে। ২০২২ সালে একটি ডাকাতির ঘটনায় সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক ব্লকচেইন প্রযুক্তি সংস্থা থেকে রেকর্ড ৬২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছিল পিয়ংইয়ং।’

এএফপি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান ভাবে দ্রুতগতিতে আন্তঃমহাদেশীয় এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। এর মধ্যে কেবল গত বছরই ৬০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বারবার ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আর তাই তাদের মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *