এপ্রিল ২৬, ২০২৪

ভুয়া লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি চক্রের মূলহোতা পলাশসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-২)। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. মনোয়ার হোসেন (৩২), রশিদুল ইসলাম (৪০), নাজীম মোল্লা (৩৫), মারুফ হোসেন (২৪), মো. নাইমুল ইসলাম (২২) ও পলাশ।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটার গান, ৭টি একনালা বন্দুক, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি, ওয়ান শুটারের গুলি ২ রাউন্ড, একনলা বন্দুকের গুলি ৬৭ রাউন্ড, ০.২২ বোর রাইফেলের গুলি ৪০ রাউন্ড, ১১টি জাল লাইসেন্স ও ১৯টি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার নামের সিল জব্দ করা হয়।

বিগত ২০০৪ সালে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে মো. পলাশ শেখ। জীবিকার তাগিদে ২০১৩ সালে চাকরির জন্য ঢাকায় আসেন এবং একটি স্বনামধন্য সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরু করেন। সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিরত অবস্থায় ২০১৫ সালে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভুয়া লাইসেন্সের একটি অবৈধ বন্দুক কেনেন। পরে সে অস্ত্র ব্যবহার করে বেসরকারি একটি ব্যাংকে অধিক বেতনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরু করেন। পরে সে নিজেই অবৈধ পথে অস্ত্র চোরাচালান ও বিক্রি শুরু করেন। সেই সঙ্গে ৪-৫ জনের একটি দল তৈরি করেন এই পলাশ।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান করত। পরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অভিনব কৌশলে ভুয়া ও জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির জন্য বেসরকারি বিভিন্ন স্বনামধন্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চাকরি প্রদানে আকৃষ্ট করতেন। এভাবে আগ্রহীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিতেন। চক্রটির মূলহোতা পলাশ।

চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে রিভলভার, পিস্তল ও এক নলা বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র অবৈধ পথে দেশে নিয়ে আসতেন। পরে আগ্রহী চাকরিপ্রার্থীদের কাছে জাল লাইসেন্সসহ অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করে ও চাকরি দিতেন। এই চাকরি প্রদানের জন্য জন প্রতি ২-৩ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন। অবৈধ অস্ত্র ও ভুয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিকিরিউটি গার্ড হিসেবে চাকরি করছেন। এছাড়াও চক্রটি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছেও চড়া দামে জাল লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করতেন।

তিনি বলেন, পলাশের নেতৃত্বে চক্রটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করতেন। পরে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার নামীয় সিল তৈরি করে জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করতেন। পলাশ গত ৫/৬ বছর ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালানের মাধ্যমে এনে এই ব্যবসা করে আসছেন।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *