মে ৯, ২০২৪

পুষ্টিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতীয় সবজি সজিনার ভারে হেলে পড়েছে সজিনার গাছগুলো। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন জেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার সজিনার বাম্পার ফলনের আশ করছেন এলাকার কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি অফিস সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ২ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা কয়েছে। এতে সজিনার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন। সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ, বম্বু, ভাদসা, দোগাছী, জামালপুর ও ধলাহার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে বারোমাসি সজিনার চাষ হচ্ছে।

এ ছাড়াও কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। বাসাবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতীয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছগুলো এখন সজিনার ভারে হেলে পড়ছে এলাকায়। প্রতি বছরের মতো জেলায় সাজনা চাষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এখানকার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান, স্থানীয় কৃষক সোহরাব হোসেন। এ ছাড়া সজিনা বিক্রি করে অনেকেই আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছেন। বাজারে এখন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি সজিনা বিক্রি হচ্ছে। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা। সদর উপজেলার বুলপাড়া গ্রামের সজিনা চাষী নজরুল ইসলাম ও আবু তাহের বলেন, বাড়ীর সামনে রাস্তার দু’ধারে ১০টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৮ মণ সজিনা বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। আশা করছি এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব। বাজারে এবার প্রথম থেকেই ২০০ টাকা কেজি সজিনা বিক্রি হচ্ছে।

জয়পুরহাটের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর সবজি। সজিনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানবদেহের কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের অনেক উপকারী। তাছাড়া অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ সজিনার পাতা এখন শাক হিসেবেও খাওয়া হয়ে থাকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতীয় সবজি। এটি বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। সজিনা গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও নেই। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *