মে ৮, ২০২৪

চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজিস্টদের মতে, প্রতিদিন প্রায় ৯০-১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। কখনো কখনো ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত চিন্তাভাবনার কারণে বেশি চুল পড়তে পারে। আবার বংশগত বহুবিধ সমস্যার কারণেও অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে।

এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত মানসিক চাপ, চুলে ভুল প্রসাধনী ব্যবহার, মাথার ত্বকের সংক্রমণ, হরমোনের প্রভাব পিসিওএস বা ফাইব্রয়েড, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, ক্যানসারের চিকিৎসা, বিপাকে সমস্যা ইত্যাদি কারণেও চুল পড়া বাড়তে পারে। এর মধ্যে ৭টি কারণে বেশিরভাগ মানুষই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। বিষয়গুলো অনেকেরই অজানা। জেনে নিন কী কী—

>> বেশিরভাগ নারীই চুল স্ট্রেট বা কার্ল করাতে অতিরিক্ত তাপ দেন। এ ছাড়া দৈনিক চুলে হিট দেওয়ার কারণে চুলের কেরাটিনের ক্ষতি হয়। ফলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়।

>> চুল খুব বেশি আঁটসাঁট করে বাঁধার কারণে এর ফলিকলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো এটি ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়াও হতে পারে, এ সমস্যার কারণে নতুন চুল গজায় না। তাই চুলের স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।

>> মাথার ত্বকে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও গরম পানি অনেকেই ব্যবহার করেন। তবে এগুলো একেবারেই ভুল কাজ। মাথার ত্বকে সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখা যায়।

আবার অত্যধিক শ্যাম্পু করাও চুলের জন্য ক্ষতিকর। এতে মাথার ত্বকে বেশি তেল তৈরি হয়, যা চুল পড়ার সমস্যা বাড়ায়।

>> শুধু প্রয়োজন হলেই চুল আঁচড়ান। অতিরিক্ত চুল আঁচড়াবেন না কখনো। ভেজা চুলের জন্য একটি চওড়া চিরুনি ও শুষ্ক চুলের জন্য ব্রিসলস ব্যবহার করুন।

>> নিয়মিত চুল ট্রিম করুন। প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ অন্তর চুল ট্রিম করলে দ্রুত লম্বা হয়। গাছের যেমন ছাঁটাই প্রয়োজন, তেমনি আমাদের চুল ছাঁটাই প্রয়োজন।

>> সালফেটস, প্যারাবেনস ও অ্যালকোহলযুক্ত চুলের পণ্য ব্যবহার করবেন না। এমন ধরনের প্রসাধনীর কারণেই বেশিরভাগ মানুষের চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। অর্গানিক পণ্য ব্যবহার করুন চুলের যত্নে।

>> বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। স্ট্রেস বাড়লে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণও বেড়ে যায়। এতে প্রদাহ সৃষ্টি হয় ও চুলের বৃদ্ধিও কমে যায়।

চুল পড়া রোধে করণীয়

বাজারচলতি প্রসাধনী নাকি ঘরোয়া টোটকা, চুল ঝরার পরিমাণ কিসে কমবে, তা বুঝতে পারেন না অনেকেই। চুল উঠতে উঠতে অনেক সময় টাক পড়ে যায়। তাই চুল পাতলা হতে শুরু করলেই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভর করে অনেক কিছুই। তাই চুল পড়া থামাতে রোজ পাতে রাখতে পারেন কয়েকটি খাবার।

ডিম

অত্যধিক পরিমাণে চুল পড়ছে? রোজ একটি করে ডিম খেতে পারেন। উপকার পাবেন। ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি, যা চুল লম্বা ও ঘন করতে সাহায্য করে। তা ছাড়া ডিমে রয়েছে ভরপুর প্রোটিন, বায়োটিন যা চুলের গোড়া শক্ত করে।

মাছ

চুল ভালো রাখতে মাছ খাওয়া জরুরি। কারণ মাছে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যেগুলো চুল ভালো রাখে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া মাছে রয়েছে ভিটামিন বি১২, যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

দুগ্ধজাত খাবার

দুধ খেলে ভালো থাকে হাড়। কারণ এতে ভরপুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম রয়েছে। এই ক্যালশিয়াম কিন্তু চুল ঝরার পরিমাণও রোধ করতে পারে। ক্যালশিয়াম ছাড়াও দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে বায়োটিন, যা চুল ঘন করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ডাল

বিভিন্ন প্রকারের ডাল চুলের জন্য ভালো। ডালে রয়েছে উপকারী স্বাস্থ্য উপাদান ভিটামিন বি। এ ছাড়া ফোলেট এবং অন্যান্য উপাদানও আছে। চুল লম্বা করতে চাইলে রোজ পাতে রাখতে হবে ডাল।

বাদাম এবং বিভিন্ন বীজ

কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া, তিসির বীজ— এই ধরনের খাবারগুলো নিয়ম করে খেলে চুল ঝরার পরিমাণ কমে। এই খাবারগুলোতে রয়েছে বায়োটিন ও ভিটামিন বি, যা শুধু চুল প়ড়া কমায় এবং চুল মসৃণ করে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *