এপ্রিল ৩০, ২০২৪

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রবল বাতাস ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আর এর জেরে সেখানে বন্ধ হয়ে গেছে বিমান চলাচল। এছাড়া প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় বহু এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।

রোববার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের কাছে এগিয়ে আসার সাথে সাথে প্রাদেশিক রাজধানী সিট্যুয়ে এবং দক্ষিণাঞ্চলের থান্ডওয়েতে প্রবল বাতাস ও বৃষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।

রোববার (১৪ মে) আঘাত হানতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে এই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সিট্যুয়ের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত রাখাইন উপকূলীয় কিয়াওকফিউ শহরের মধ্যে আঁছড়ে পড়বে পূর্বাভাসকারীরা জানিয়েছেন।

জুম আর্থ ওয়েবসাইট অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার সকালে প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার (ঘণ্টায় ১৬১ মাইল) বেগে বাতাস বইছিল।

মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, সিট্যুয়ে শহরের বহু বাসিন্দা গত দুই দিনে উচু এলাকার দিকে রওনা হয়েছেন, তবে রোববার সকালেও অনেক মানুষকে শহরে দেখা গেছে। মিয়ানমার এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, রাখাইন প্রদেশে তাদের সব ফ্লাইট সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় দেশের বহু এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে মিয়ানমার। এছাড়া দেশটির উপকূলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে।

এমনকি ঘূর্ণিঝড় মোখা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারের পশ্চিম উপকূলে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া মৌসুমের প্রথম বড় ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে প্রতিবেশী বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কায় মিয়ানমারের উপকূলের আশপাশের এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার বিকেলে রাখাইনের সিট্যুয়ের কাছে আঘাত হানতে পারে এবং এর আগেই লক্ষাধিক রাখাইন বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়েছেন।

ইরাবতী বলছে, রাখাইনের সিট্যুয়ের পাশাপাশি কিয়াউকফিউ, মংডু, রাথেদাউং, মাইবোন, পাউকতাও এবং মুনাং শহরে লাল সতর্কতা জারি করেছে মিয়ানমারের জান্তা। এছাড়া এই শহর ও এলাকাগুলোতে একই সতর্কতা জারি করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা-বিরোধী বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার।

আরাকান আর্মির (এএ) মুখপাত্র খাইং থু খা বলেছেন, গত বুধবার থেকে তারা রাখাইনের প্রায় ১ লাখ ২ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে এবং তাদেরকে স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সরবরাহ করছে। আরাকান আর্মির ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে ঝড়ের পর দুর্গত মানুষের জন্য সহায়তা প্রদান করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের আগে সিট্যুয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ বাসিন্দা তাদের বাড়ি ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন শহরটির বাসিন্দা ও লেখক ওয়াই হিন অং। রাখাইনের এই শহরের জনসংখ্যা এক লাখেরও বেশি এবং মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজে সহায়তা করেছেন ওই লেখক।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *