বান্দরবানের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘অপতৎপরতাকে’ কেন্দ্র করে ঢাকায় কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা প্রস্তুতি ঘুরে দেখার পর মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। পাহাড়ে কেএনএফের যে সমস্যাটি রয়েছে, তারা ঢাকা মহানগরে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বা এই ধরনের কোনো শঙ্কা আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত নেই।’
গত ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র লোকজন। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি।
এসব ঘটনায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ এর নাম আসে; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত।
দুই ঘটনায় মোট ছয়টি মামলা করেছে পুলিশ। কেএনএফ এর প্রধান সমন্বয়কারীসহ মোট ৫৪ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি বিলাইছড়ি ও বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ গঠনের ঘোষণা দিয়ে সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে আসছে কেএনএফ। অর্থের বিনিময়ে তারা নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিত বলেও ২০২২ সালে খবর আসে।
সেই প্রসঙ্গ ধরে প্রশ্ন করা হলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘তাদের সাথে যে জঙ্গি সংগঠনটির সম্পর্ক ছিল, তাদের তৎপরতা এখন আর পরিলক্ষিত হচ্ছে- এমন কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতার আগাম খবর আমাদের কাছে নেই। তারপরেও ডিএমপি সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাত ছাড়াও ঢাকার ১৮৪টি ঈদগাহ ময়দান এবং ১৪৮৮টি মসজিদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘ঢাকা শহরের কোনো মসজিদ, ঈদগাহ ময়দান অর্থাৎ ঈদের জামাত যেখানে হবে, তার একটিও নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে থাকবে না।’
পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট ও বম ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত থাকবে বলে জানান ঢাকার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকল জনসাধারণের কাছে সহযোগিতা চাই, সেটি হলো পুলিশের কার্য্ক্রমে সহযোগিতা করুন। কেউ কোনো দাহ্য পদার্থ, ধারাল বস্তু কিংবা বিস্ফোরক জাতীয় বস্ত নিয়ে ঈদের জামাতে আসবেন না।
‘কোনো ধরনের সমস্যা পরিলক্ষিত হলে আপনারা পুলিশকে ফোন করুন, ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করুন। স্থানীয় থানাকে বিষয়টি অবহিত করুন। সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে, জামাত শেষে বের হওয়ার সময় সুশৃঙ্খলভাবে বের হোন, তাড়াহুড়া করে বের হতে গিয়ে কোনো সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমরা সকলের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।’