মে ১৭, ২০২৪

শুরুর কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন পেসাররা। বাকিটা অনায়েসে করেছেন স্পিনাররা। বিশেষ করে তাইজুল ইসলাম, যার ঘূর্ণিতে ওলট-পালট আয়ারল্যান্ড। বাঁহাতি এই স্পিনারের ৫ উইকেটের দিনে আইরিশরা অল আউট হয়েছে ২১৪ রানে। ৫৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল।

এদিন মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছয়জন জেনুইন বোলার নিয়ে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। শুরুতেই আক্রমণে এসেছেন শরিফুল ইসলাম এবং খালেদ আহমেদ। ফিল্ডিংয়ে চারজন স্লিপ এবং একজন ওয়াইড স্লিপ নিয়ে দিন শুরু করেছে দলটি। আগ্রাসী এই মানসিকতার সামনে বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি আইরিশদের ওপেনিং জুটি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ফিরে গেছেন আয়ারল্যান্ডের ওপেনার মুরে কমিন্স। ১০ বলে ৫ রান করে শরিফুলের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হয়ে ফিরে গেছেন তিনি।

সঙ্গী কমিন্স ফেরার পর আরও সতর্ক হয়ে খেলতে থাকেন জেমস ম্যাককলাম। ধীরে ধীরে দলের রান বাড়ানোর প্রচেষ্টায় থাকেন তিনি। যদিও এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। দশম ওভারের শেষ বলে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান এবাদত। তার বলটি ম্যাককলামের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে চলে যায়। প্রথমে হাত ফসকালেও পরবর্তীতে বলটি তালুবন্দী করে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

৩৪ বলে একটি চারে ১৫ রান করে বিদায় নেন ম্যাককলাম। ২৭ রানে দুই উইকেট হারায় আইরিশরা। দ্রুত দুই ওপেনাকে হারানোর পর অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও হ্যারি টেক্টরের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়েছিল আয়ারল্যান্ড। তবে চমৎকার এক ডেলিভারিতে তাদের জমে যাওয়া জুটি ভেঙে দেন তাইজুল।

অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও সহজে রান পাচ্ছিলেন না বালবার্নি। সুইপ করে চাপ কিছুটা সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। সেই শটই কাল হয় তার জন্য। ফুল লেংথ বল ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া দিলে একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন বালবার্নি। বল আঘাত হানতো অফ স্টাম্পে। তবে ইম্প্যাক্ট ‘আম্পায়ার্স কল’ ছিল বলে নষ্ট হয়নি আইরিশদের রিভিউ।

বালবার্নির বিদায়ে ভাঙে ৭১ বল স্থায়ী ২১ রানের জুটি। আইরিশ অধিনায়ক ৫০ বলে করেন ১৬ রান। ইনিংসে নেই কোনো বাউন্ডারি। এরপর ক্রিজে নেমে কার্টিস ক্যাম্ফার ও টেক্টর মিলে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাইজুল, এবাদত ও শরিফুল। ৬৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে উল্টো বাংলাদেশের বোলারদের পরীক্ষা নিতে শুরু করেন ক্যাম্ফার ও ট্যাক্টর। দেখে শুনে খেলে দ্রুতই দলীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন দুজন। সঙ্গে ট্যাক্টর হাটতে থাকেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরির পথেও। তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৮০ বলে ফিফটি করার পথে টেক্টর মেরেছেন এক ছক্কা ও ছয় চার।

এরপর আর এগোতে পারেননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। মেহেদী হাসান মিরাজের চমৎকার এক ডেলিভারিতে বাজে শটে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। পরের ওভারে ক্রিজে আসা পিটার মুরকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাইজুল। এরপর ক্যাম্ফারকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে আইরিশদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মিরাজ। ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন ক্যাম্ফার।

৬ উইকেট হারিয়ে বসা আইরিশদের আরও বিপদে ফেলেন এবাদত। দলীয় ১৫৯ রানে অ্যান্ডি ম্যাকবির্নিকে বিদায় করেন এই পেসার। শর্ট বলে পুল করে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন তিনি। টাইমিং করতে পারেননি, স্কয়ার লেগে একটু পিছিয়ে গিয়ে ক্যাচ নেন মুমনিল হক ভাঙে ৯১ বল স্থায়ী ৩৫ রানের জুটি। এরপর দলীয় ২০০’র আগে লর্কান টাকারকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন তাইজুল। শেষের দিকে দলীইয় ২০১৪ রানে মার্ক অ্যাডায়েরকে তুলে নিয়ে ক্যারিয়ারের ১১তম পঞ্চম উইকেট তুলে নেন এই স্পিনার। শেষ ব্যাটার হিসেবে মেহেদি মিরাজ বিদায় করেন গ্রাহাম হিউমকে। ২১৪ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *