মে ৯, ২০২৪

সবুজ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ছাড়া পরিবেশ রক্ষা করা কঠিন। এ জন্য সারা বিশ্বই এখন সবুজ অর্থায়নে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে টেকসই ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে। এধরনের অর্থায়নে ব্যাংকগুলোরও অংশগ্রহণ বাড়ছে। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর মোট সবুজ অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অর্থায়ন ১ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা বা ৭৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স’ বিভাগের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ৩১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করেছে ৩১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। একই সময়ে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা মোট মেয়াদি ঋণের ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

সবুজ অর্থায়নের মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ, পানি ও কাগজের খরচ কমানোর উপযোগী প্রতিষ্ঠান ও কারখানাগুলোকে ধরা হয় সবুজ শিল্প হিসেবে। ২০১১ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবুজ অর্থায়নের বিষয়ে নীতিমালা জারি করলেও সম্প্রতি সেটি সংশোধন করে নতুন করে জারি করা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন, তরল ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণ, গ্রিন কৃষি ও এসএমইসহ বিভিন্ন খাতের ৬৮টি ব্যাংকিং প্রডাক্টে বিনিয়োগকে সবুজ অর্থায়ন হিসেবে বিবেচিত করছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিশ্বে কার্বন নিঃসরণে প্রতিদিনই বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পানি বৃদ্ধি এবং মাটির লবণাক্ততা। ঝুঁকিগুলোকে শনাক্ত করে তা বন্ধে শুরু হয়েছে নানামুখী কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক। চামড়াজাত শিল্প, তৈরি পোশাক শিল্প, সিরামিক এসব খাতে এখন সবুজ কারখান গড়ে উঠছে। বিশেষ সক্ষমতা অর্জনের জন্য উদ্যোক্তারাও এখন এধরনের কারখানা করার দিকে ঝুঁকছে। এছাড়া খাতটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

এদিকে টেকসই অর্থায়নের আওতায় সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় এমন প্রকল্পও যুক্ত হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শিল্পের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। ঝুঁকি কমাতে এই দুই খাতে অর্থায়নের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলো এসব খাতে অর্থায়ন বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি এখন দেশের অনেক ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। ব্যাংকগুলোতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে গুরুত্ব পাচ্ছে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *