এপ্রিল ২৭, ২০২৪

সারা দেশের পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হন তারা। সেখান থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। তারা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে পদযাত্রা করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, গত ৯ মাস ধরে ট্রেইনি চিকিৎসকেরা ভাতাবঞ্চিত। সেই সঙ্গে প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট ও ডিপ্লোমা ট্রেইনিদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাতা আরেক দফা বাড়ানোর কথা জানুয়ারি থেকে। সেই সঙ্গে ইন্টার্নদেরও ভাতা বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু আমাদের শুধু আশ্বাসের ওপরেই রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের চার দফা দাবি না মেনে নিলে ৪৮ ঘণ্টার পর কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

দাবির মধ্যে রয়েছে- পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৩০ হাজার করতে হবে। এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করতে হবে। বিএসএসএমইউয়ের অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট এবং নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ভাতা পুনরায় চালু করতে হবে এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন সংসদে পাস ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন পরিষদের সভাপতি জাবের মো. আব্দুল্লাহ বলেন, পোস্টগ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে আমরা মিলিত হয়ে আমাদের ভাতা ৩০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আজ বাংলাদেশের সব মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা এক হয়েছি। এক বছর আগে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। পাঁচ মাস ধরে আমরা সব মেডিকেলের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু কোনো আশ্বাস পাইনি।

তিনি বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছি, তবে জরুরি বিভাগে আমাদের চিকিৎসক থাকবেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে যাব।

এ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অবস্থান করা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের কাছে চার দফা দাবি ও কর্মবিরতির কথা জানান এসব চিকিৎসক।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেন, আমি তোমাদের কাজটা হাতে নিলাম। কাল বা পরশু সময় করে একটি মিটিং করব বিষয়টি নিয়ে। যত দ্রুত সুরাহা করা যায় সেটি আমি করব, এরপর তোমাদের জানাব।

মন্ত্রী বলেন, ইতোপূর্বে তোমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে কী হয়েছে সেটি আমাকে বলবে না। আমি নিজে চিকিৎসক, কাজেই আমি তোমাদের সবকিছু জানি। সব চিকিৎসকের মানসম্মান নির্ভর করে তোমাদের ওপর। তোমরা যদি ভালো কাজ করো, তাহলে সবাই আমার প্রশংসা করবে। দরকার হলে আমি এটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করব। কারণ তোমাদের ভালোভাবে রাখতে না পারলে আমি কাজ আদায় করতে পারব না। জনগণ চিকিৎসাসেবা পাবে না।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *