মে ৭, ২০২৪

বাংলাদেশ ও ভারতের বন্দরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে পারেনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা পতাকাবাহী রুশ জাহাজ ‘উরসা মেজর’। এবার জাহাজটি যাচ্ছে চীনের দিকে। দক্ষিণ চীনের সায়েনথো বন্দরে (সিএনএসটিজি) বহন করা পণ্যগুলো খালাস করার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, ভারতের বন্দরে ভিড়তে না পারায় জাহাজটিকে রুট পরিবর্তন করিয়ে চীনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চীনের সায়েনথো বন্দরে গিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে চায় রাশিয়া। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জাহাজটি চীনের বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে।

গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টেলিজেন্সের তথ্য বলছে, উরসা মেজর জাহাজটি বর্তমানে বঙ্গপোসাগরে ভারতের অংশের মাঝ সমুদ্রে রয়েছে। জাহাজটি সায়েনথোর দিকে যাচ্ছে। প্রায় সাড়ে আটদিনের মাথায় জাহাজটি সায়েনথো বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে।

এদিকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজটি নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার (২২ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার এমন আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেনেশুনে নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজের নাম পরিবর্তন করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পণ্য পাঠিয়েছে। আমরা এটি আশা করিনি। আমাদের কাছে তাজ্জব লেগেছে এটা।

তিনি বলেন, রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এর বাইরে তাদের কয়েক হাজার জাহাজ আছে। নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজ আমরা গ্রহণ করতে চাই না। আমরা রাশিয়াকে বলেছি, তাদের যেসব জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, সেগুলো ছাড়া অন্য যেকোনো জাহাজে পাঠাতে পারে।

নিষেধাজ্ঞা নেই এমন একটি জাহাজে রাশিয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোমেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর উরসা মেজর নামে রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। বাংলাদেশ জানতে পারে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ। যেটি রঙ ও নাম বদল করে উরসা মেজর নাম দেওয়া হয়। জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর: ৯৫৩৮৮৯২, যা প্রকৃতপক্ষে ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজের সনদ নম্বর।

তথ্য নিশ্চিত হবার পরে বাংলাদেশ জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে। যদিও জাহাজটিকে বন্দরে পণ্য খালাসের অনুমতি দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়া। তবে জাহাজটি বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে জাহাজটি ভারতের যেকোনো বন্দরে পণ্য খালাস করে, পরে তা অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু জাহাজটি প্রায় দুই সপ্তাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করে ব্যর্থ হয়। পরে জাহাজটি ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *