ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের শুরুটা মনের মতো হয়নি বাংলাদেশের। দিনের শুরুতেই জাকির হাসানকে হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। তবে ধাক্কা সামলে মাহমুদুল হাসান ও নাজমুল হোসেনের জুটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে লিটন দাসের দল। যদিও আর কোন উইকেট না হারিয়ে ভালো অবস্থানে থেকেই লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ।

প্রথম ঘন্টায় ৪৫ রান স্কোরবোর্ডে রান যোগ করে বাংলাদেশ। তবে পরের ঘন্টার শুরু থেকে আরও একটু দ্রুতগতিতে রান যোগ করেন নাজমুল-মাহমুদুল জুটি। দলকে হাফ সেঞ্চুরির ঘর পার করিয়ে একশোর পথে নিয়ে যান দুজন। তিনে নামা নাজমুল প্রতিপক্ষ বোলারদের ৮০’র বেশি স্ট্রাইক রেটে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ৫৮ বলে এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। অপরপ্রান্তে থাকা মাহমুদুল মন্থর ব্যাটিংয়ে ভালো সঙ্গ দিচ্ছেন তাকে। তিনিও হাঁটছেন হাফ সেঞ্চুরির পথে। ৭০ বল খেলে রান করেছেন ৩৮। প্রথম সেশনে নিজেদের মাঝে সেঞ্চুরি জুটি গড়ে এক উইকেটে ১১৬ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় লিটনবাহিনী।

এক উইকেটে ১১৬ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে জয়কে দর্শক বানিয়ে দলকে একাই টেনে নিতে থাকেন শান্ত। আফগান বোলারদের বিপক্ষে দারুন ব্যাটিং করে এই ক্রিকেটার দলকে টেনে নিয়ে যান দেড়শোর ঘরে। নিজেদের মাঝে দেড়শ রানের জুটিও গড়েন তারা। দেড়শ রানের জুটিতে জয়ের তুলনায় শান্ত রান তুলেছেন একটু দ্রুত গতিতেই। তা ছাড়া জয় যেখানে যোগ করেছেন মাত্র ৪৭ রান, সেখানে শান্ত যোগ করেন ৯২ রান। তবে শান্তর আগে ১০২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জয়। অন্যদিকে নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে শান্ত’র একশোর মাইলফলকে পৌছাতে একটু সময় নেন শান্ত।

৫৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ক্রিকেটার পরের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৬০ বলে। ১১৮ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে দুইশোর পথে নিয়ে যান এই ক্রিকেটার। স্বীকৃত ক্রিকেটের শেষ ৫ ইনিংসে এটি শান্তর দ্বিতীয় শতক। রহমত শাহর করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের খাটো লেংথের বলে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। আর তাতেই শান্তর সঙ্গে তার ২১২ রানের জুটি ভাঙে। জয় ফিরেছেন ১৩৭ বলে ৭৬ রান করে। তার ইনিংস জুড়ে ছিল ৯টি চারের মার।

এরপর মুমিনুল হকেরও পরীক্ষা নিয়েছেন রহমত। অফ স্টাম্পের ওপর হালকা ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গিয়ে বল মিস করেন মুমিনুল। তা সোজা আঘাত হাতে প্যাডে। আফগান ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনেও সাড়া দেননি আম্পায়ার। এরপর রিভিউ নেয় আফগানিস্তান। রিভিউতে দেখা যায় বলের লাইন ও লেন্থ ঠিক থাকলেও স্টাম্পের বেল ছুঁয়ে যেত বল। ফলে আম্পায়ার্স কলের কারণে সে যাত্রায় বেঁচে যান মুমিনুল। জীবন পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি এই ক্রিকেটার। নিজাত মাসুদের ছোড়া কনুই ছোঁয়া বাউন্সার খেলতে গিয়ে দোটানায় পড়ে ছেড়ে দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে কিপারের তালুবন্দি হন মুমিনুল। ১৫ রানে ফেরেন তিনি।

সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শান্ত ছুটেছিলেন আরও বড় সংগ্রহের পথে। দলকেও টেনে নিচ্ছিলেন ৩০০’র পথে। তাকে সঙ্গ দেয়া মুশফিকুর রহিম খেলছিলেন দেখেশুনেই। তবে নো বলে বোল্ড হয়ে জীবন পাওয়া শান্ত নিজেকে দেড়শর ঘরে নিয়ে যেতে পারেননি। আমির হামজার বলে সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে নাসির জামালের তালুবন্দি হন তিনি। ১৪৬ রান করে শেষ পর্যন্ত থামেন শান্ত।

এদিকে দিনের শুরুতে টস জিতে বোলিং নেয়ার সিদ্ধান্তটা নিতে সময় নেননি আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ঠিক প্রমাণ করতে অবশ্য সময় নেননি অভিষিক্ত নিজাত মাসুদ। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই জাকিরকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরান এই পেসার।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...