মে ২০, ২০২৪

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছে, খাদ্যের অভাবে উত্তর ও মধ্য গাজায় কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, দুই সপ্তাহেরও বেশি আগে ২৩ জানুয়ারি সংস্থাটিকে শেষবার এই অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
মানবিক সহায়তা প্রদানকারী অন্যান্য সংস্থাগুলোও ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ত্রাণ পেতে বাধা দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

লাজারিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘বছরের শুরু থেকে উত্তরে আমাদের সাহায্য মিশনের সহায়তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, জাতিসংঘ সংস্থা উত্তর গাজাকে অনাহার এবং ক্ষুধার গভীর সংকট এলাকা চিহ্নিত করেছে। কারণ, সেখানে মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। লাজারিনি ‘এ অঞ্চলে বসবাসকারী অন্তত ৩ লক্ষ মানুষ তাদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সহায়তার ওপর নির্ভর।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর ক্ষুদ্র, ঘনবসতিপূর্ণ গাজা অঞ্চল অবরোধ করে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে এবং উত্তর ও মধ্য গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

গাজার আনুমানিক ২৪ লক্ষ লোকের অর্ধেকেরও বেশি এখন দক্ষিণের রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছে। যেখানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখন সৈন্যদের রাফাহ আক্রমণের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন।

গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ বিষয়ক পরিচালক থমাস হোয়াইট বলেছেন, রাফাহতে আক্রমণাত্মক অভিযান নিয়ে এখন ‘চরম উদ্বেগ’ রয়েছে। এখান থেকে সংস্থাটি পুরো গাজা উপত্যকার জন্য তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের যদি রাফাহ থেকে সরে যেতে হয় তাহলে সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কঠিন হবে। আমরা এখনই জনগণের চাহিদা মেটাতে সংগ্রাম করছি।’

তিনি বলেন, ‘যদি নতুন করে হাজার হাজার লোক আবার দক্ষিণে সরে যায়, তবে তাদের সমর্থন করার জন্য আমাদের কাছে সংস্থান নেই এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে থাকা শহর থেকে আমাদের কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না।’
দক্ষিণে সরে যাওয়া সত্ত্বেও অনেকে ওয়াদি গাজা, গাজার কেন্দ্রে এবং উত্তরে রয়ে গেছেন।

গাজায় জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ-এর প্রধান জর্জিওস পেট্রোপোলোস বলেছেন, এই অঞ্চলটিকে ‘ক্ষুধা ও হতাশার মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে’।

তিনি বুধবার এএফপি’কে বলেন, ত্রাণ সংস্থাগুলোকে অবরুদ্ধ করা হচ্ছে, যখন কিছু ট্রাক এদিক দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলোকে বাসিন্দারা ঘিরে ধরছে। উত্তর গাজার এসব এলাকা ‘অনাহারের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে।

বুধবার এএফপি’র একজন সাংবাদিক গাজা শহরের দক্ষিণে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রধান সড়কে ত্রাণবাহী ট্রাকের একটি বহরের অপেক্ষায় শত শত লোককে প্রত্যক্ষ করেছেন।

এএফপি’র সাংবাদিকরা বলেন, যখন তারা ইসরায়েলি সামরিক যানগুলোকে তাদের দিকে অগ্রসর হতে দেখেন। তখন অনেকেই পালিয়ে যায় কিন্তু অন্যরা বহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *