এপ্রিল ২৯, ২০২৪

বিজ ডেস্ক
রাশিয়ান অশোধিত তেল এবং পণ্যের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আগে এশিয়ান বাজারে প্রচুর জ্বালানি তেল রপ্তানি করা হয়েছে। এর ফলে সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার উপকূলে ট্যাঙ্কারগুলিতে এক মিলিয়ন টনের বেশি রাশিয়ান উচ্চ-সালফার জ্বালানি তেল (HSFO) সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

ভর্টেক্সা জানিয়েছে এশিয়াতে রাশিয়ার তেল আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুর , চীন এবং ইন্ডিয়া। কিন্তু সিঙ্গাপুর আমদানিকৃত তেলের মাত্র ৩০% তাদের ল্যান্ডেড স্টোরেজে অফলোড করেছে , বাকি তেল কাছাকাছি নোঙর করা ভাসমান স্টোরেজ ট্যাঙ্কারগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন চাহিদা কমে যাওয়ায় মধ্যেপ্রাচ্যে রাশিয়ার তেল আমদানির হার কমে গেছে। রাশিয়া থেকে মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি তেলের আমদানি জুলাই এবং আগস্ট উভয় সময়ে রেকর্ড প্রতিদিন আমদানি ছিল ২১০,০০০ ব্যারেল , যার চাহিদা কমে অক্টোবরে প্রতিদিন ৯০,০০০ ব্যারেল হয়েছে । যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার পর এখন পর্যন্ত এশিয়া রাশিয়ার তেল আমদানির প্রধান বিকল্প আউটলেট।

নিষেধাজ্ঞা শর্তেও ভারত ২০২১ সালে এপ্রিল-মে মাসে রাশিয়া থেকে মাত্র ৪৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের তেল কিনেছিল , আর ২০২২-এ শুধু মে মাসেই ১৯০ কোটি ডলারের তেল কিনেছে ভারত৷ আগে বছরে চাহিদার মোট দুই শতাংশ রাশিয়া থেকে আসত ৷ এবার এপ্রিল-মে মাসে চাহিদার ১০ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে এসেছে ৷ সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার তেল আমদানি বৃদ্ধি করে প্রতিদিন ১০০০০ ব্যারেল আমদানি করছে । মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে দামে তেল কেনে ভারত, তার তুলনায় ব্যারেল প্রতি প্রায় ২০ ডলার বা তারও বেশি ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া৷ তাই ভারত এখন যে সব দেশ থেকে তেল কেনে সেই তালিকায় দুই নম্বরে উঠে গেছে রাশিয়া৷ আগে সৌদি আরব ছিল দুই নম্বরে৷ এখন তারা তিন নম্বরে আছে৷ এক নম্বরে আগের মতোই ইরাক আছে ৷

রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আসার ফলে দুইটি সুবিধা পাচ্ছে ভারত৷ এক, তাদের তেল কেনার খরচ কমেছে৷ ফলে কেন্দ্রীয় সরকার সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দাম বিশেষ বাড়ায়নি, বরং কমিয়েছে৷ দুই, ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে টান পড়েনি৷ ভারতের কাছে এখন যথেষ্ট পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা আছে, ফলে সেদিকে চিন্তার কোনো কারণ নেই৷ আর রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত এই যে তেল কিনছে, তা অ্যামেরিকা ও ইউরোপের আপত্তিকে উড়িয়ে দিয়েই কিনছে৷ বাইডেনের পরামর্শদাতা ভারতে এসেছেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান ভারতে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে গেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর অ্যামেরিকা গেছেন ৷ সব জায়গায় রাশিয়া থেকে তেল কেনার প্রসঙ্গ এসেছে ৷ কিন্তু ভারত জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাশিয়া থেকে তেল কিনবে ৷ ভারতের বক্তব্য ছিল, ইউক্রেনে হামলার পরও ইউরোপ রাশিয়া থেকে একদিনে যে পরিমাণ তেল ও গ্যাস কিনছে, সেই পরিমাণ তেল ভারত সারাবছর ধরেও রাশিয়ার কাছ থেকে কেনে না ৷ তাহলে কেন ভারতের ক্ষেত্রে আপত্তি তোলা হবে ৷

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *