মে ৯, ২০২৪

নীতিমালা লঙ্ঘন করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদন করেছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। ফলে ওই সকল প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ আদায় হচ্ছে না, এতে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। এ নিয়ে গত ২০ অক্টোবর ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ অনুমোদনে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। আইসিবির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর সেপ্রেক্ষিতে কোম্পানির কাছে দলিলসহ ব্যাখ্যা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কোম্পানিকে চিঠি জারির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এবং সম্প্রতি এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারকে সুসংহত করতে আইসিবিকে সংসদীয় কমিটির নির্দেশ প্রসঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে উপযুক্ত বিষয়ে আইসিবিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর ধারা ১১ (২) এর অধীনে সাত কার্যদিবসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় দলিলসহ ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ জানানো হয়েছে।

এরআগে ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উল্লেখিত সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মাহবুবউল আলম হানিফ, মুহিবুর রহমান মানিক ও নাহিদ ইজাহার খান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের জানান, সরকারের সদিচ্ছা সত্ত্বেও বিনিয়োগের ক্ষেত্র সমপ্রসারণে ব্যর্থ হচ্ছে আইসিবি। আইসিবির ঋণ আদায়ের হার সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, অনেক অস্তিত্বহীন ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেওয়া হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি জানান, অডিট আপত্তির সংখ্যাও বেশি। এ সকল বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির পক্ষ থেকে ওই সকল ঋণ অনুমোদনে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ঋণ আদায়ে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে আইসিবির গৃহীত পদক্ষেপ, পুঁজিবাজারকে সুসংহত ও সক্রিয় রাখতে আইসিবির ভূমিকা, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহ বাড়াতে আইসিবির গৃহীত কার্যক্রম, শিল্প খাতে আইসিবির বিনিয়োগ তথা দেশের শিল্পায়নে আইসিবির ভূমিকা, দেশের স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে আইসিবির প্রয়াস, আইসিবির বিগত ১০ বছরের লাভ-লোকসানের হিসাবসহ আর্থিক বিবরণী এবং অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে পুঁজিবাজারকে সুসংহত ও সক্রিয় রাখতে আইসিবিকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *