রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিন দিনের ভোট গ্রহণের শেষ দিনে আজ রোববার ভোটকেন্দ্রগুলোয় বড় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ক্রেমলিনবিরোধীরা। শক্তিশালী বিরোধী দলহীন এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মূলত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরেক মেয়াদে তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে যাচ্ছেন।
গত শুক্রবার শুরু হওয়া এ নির্বাচনে এর মধ্যেই নানা বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেছে। ভোট গ্রহণের প্রথম দিনও রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। ব্যালট বাক্সে রং দেওয়া ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মৃত্যুর আগে রাশিয়ার নাগরিকদের আজকের দিনে (১৭ মার্চ) বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন অ্যালেক্সি নাভালনি। সুমেরু অঞ্চলের একটি কারাগারে বন্দি থাকা পুতিনবিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি গত মাসে মারা যান। তার আগে তিনিও পুতিনের বিরুদ্ধে বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া তার স্বামীর সেই আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ বিক্ষোভকারীর ভোটকেন্দ্রগুলোয় হাজির হয়ে বিক্ষোভ করা উচিত।
সেই সঙ্গে ইউলিয়া নাভালনায়া বিক্ষোভকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন, ব্যালট পেপারে ‘নাভালনি’ লিখে তা নষ্ট করে ফেলুন। কিংবা পুতিন ছাড়া নির্বাচনে দাঁড়ানো অন্য প্রার্থীদের ভোট দিন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর রাশিয়ায় জনসমাগম করে বিক্ষোভ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ধরা হয়। তাই এবারের নির্বাচন ঘিরে বিক্ষোভকারীদের আগে থেকে বারবার সতর্ক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাজধানী মস্কোর বাসিন্দা এক তরুণ নিরাপত্তার কারণে নাম গোপন রাখার শর্তে এএফপিকে বলেন, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে তিনি মস্কোয় বিক্ষোভে অংশ নেবেন। তিনি আশা করছেন, ‘রাশিয়ার মানুষ যে সংঘাতের বিরুদ্ধে, বর্তমান শাসনের বিরুদ্ধে; সেটা এ বিক্ষোভ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেবে বলছেন।’
পুতিনের বয়স এখন ৭১ বছর। তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সদস্য ছিলেন। ১৯৯৯ সাল থেকে পুতিন রাশিয়ায় ক্ষমতায় আছেন। এখন অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন তিনি।
যদি পুতিন আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় বসেন, তাহলে তিনি ১৮ শতকে ক্ষমতায় থাকা ক্যাথেরিন দি গ্রেটের পর সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা রুশ নেতা হবেন।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের সামনে সত্যিকার অর্থে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দুজন প্রার্থীকে ভোটে লড়তে বাধা দিয়েছেন পুতিন। তারা দুজনে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন-পূর্ববর্তী ভাষণে পুতিন বলেন, রাশিয়া একটি ‘কঠিন সময়’ পার করছে।