নভেম্বর ১৪, ২০২৪

বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছর ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার কাজে দায়ী ব্যক্তিরা এই নীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে বলেও সেসময় জানানো হয়েছিল।

আর সেই ভিসা নীতি এখনও বহাল আছে বলে জানিয়েছে দেশটি। এমনকি এই নীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল এসব কথা বলেছেন।

এছাড়া এদিনের ব্রিফিংয়ে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গটিও উঠেছে। সেখানে শান্তিতে এই নোবেলজয়ীর জন্য স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ভিসা নীতি প্রয়োগের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, থ্রি সি ভিসা নীতির অধীনে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের যে ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল, সে বিষয়ে বর্তমান অবস্থা জানতে চাচ্ছি। কারণ বাংলাদেশে সাম্প্রতিক নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়নি এমন উদ্বেগ রয়েছে।

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ভিসানীতি এবং তা পরিবর্তনের বিষয়ে নতুন কোনও আপডেট আমার কাছে নেই। আমার উপলব্ধি হচ্ছে, শুধুমাত্র নির্বাচন শেষ হওয়ার কারণে এসব নীতির সূর্যাস্ত (অবসান) হয় না। তবে এ বিষয়ে জানানোর মতো নতুন কোনও আপডেট আমার কাছে নেই।

এই পর্যায়ে ওই সাংবাদিক জানতে চান, এখনও কি সেই নীতি বহাল আছে?

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘সেটাই – হ্যাঁ। (ভিসা) নীতির বিষয়ে কোনও পরিবর্তন হয়নি।’

এরপর ব্রিফিংয়ে ওই সাংবাদিক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী। আদালতের আরেকটি আদেশের মাধ্যমে তার বিদেশ ভ্রমণের ক্ষমতা সীমিত করেছে সরকার। ১২৫ জন নোবেল বিজয়ীসহ ২৪৩ বিশ্ব নেতাদের একটি জোট, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারিক হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; সিনেটর ডিক ডারবিনের নেতৃত্বে ১২ জন সর্বদলীয় মার্কিন সিনেটর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সমস্ত হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এই রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে স্টেট ডিপার্টমেন্ট কীভাবে দেখছে?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বলেন, দেখুন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভীতি প্রদর্শনের লক্ষ্যে শ্রম আইনের অপব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতো আমাদেরও উদ্বেগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করব। আর এই আবেদন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...