প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সাহিত্যের আলাদা একটা মাধুর্য আছে। আমাদের দেশের নদী-নালা, খাল-বিল, বন, পাখির ডাক সব কিছুর মধ্যেই আলাদা একটা সুর আছে, ছন্দ আছে। বিদেশিরা আমাদের ভাষা সম্পর্কে আরও জানতে পারুক সেটাই আমরা চাই। বঙ্গবন্ধু একবার আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলা আয়োজন করেছিলেন। আমি মনে করি, এ রকম বিশেষ সাহিত্য মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে বাংলা একাডেমি।
বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন থেকে বইমেলা শুরু তখন থেকেই মেলায় আসতাম। সকাল থেকে সারাদিন এখানে ঘুরঘুর করতাম। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পায়ে শিকল পড়ে যায়; নিয়মের মধ্যে আসতে হয়, আবার চলে যেতে হয়; আগের মতো সেই স্বাধীনতাটা পাচ্ছি না; সেটা আর উপভোগ করতে পারি না।
তিনি বলেন, এ বটতলায় অনেক সময় কাটিয়েছি আমরা। কোভিডের কারণে দুই বছর সরাসরি মেলায় আসতে পারিনি। আজকে দীর্ঘদিন পর আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। যদিও আগের মতো সেই স্বাধীনতা পাচ্ছি না। তারপরও বাংলা একাডেমিতে আসতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সব চাইতে বড় পাওয়া। এই প্রাঙ্গণে আমার সবসময় পদচারণা ছিল। আমি সবসময় বাংলা একাডেমির লাইব্রেরি ব্যবহার করতাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের উপর উর্দুকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, এর প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালে ২ মার্চ সলিমউল্লাহ মুসলিম হলে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। একটা বিজাতীয় ভাষা, আবার সেটাকে যখন প্রতিবাদ করা হলো তখন বাংলা ভাষাকে আরবি বা উর্দু হরফে লেখার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হলো। সেই অধ্যায় আমাদের দেখতে হয়েছে। আবার পরবর্তীকালে বলা হলো ল্যাটিন হরফে লিখতে হবে। বাঙালি কোনোটাই মানেনি। আমরা সেটা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা নিয়ে এগিয়ে যাব।
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন প্রমুখ।