বিজ রিপোর্ট
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী দু-দিনের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাবে পড়তে শুরু করবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘সিত্রাং’। এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সিত্রাং আগামী মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা-বরিশাল উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রাকৃতিক নানা কারণে সমুদ্রের কোনো স্থানে কেন্দ্রাভিমুখী ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সুস্পষ্ট লঘুচাপ হচ্ছে ঘণ্টায় ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হওয়ার অঞ্চল। নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। কোনো ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, আন্দামান সাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
আগামী দু-দিনের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচদিনের মধ্যে সারাদেশের আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
অন্যদিকে সর্বশেষ সামুদ্রিক আবহাওয়া পরিস্থিতিতে অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।