নভেম্বর ১৫, ২০২৪

১৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শামীম পাটুয়ারির হাফ সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ২০১৭ সালের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স। বাঁচা-মরার ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারের টিকিট কেটেছে নুরুল হাসান সোহানের দল।

যদিও ইনিংসের শুরুর ওভারেই উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর। সাকিব আল হাসানকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের তালুবন্দি হন নাইম শেখ। ০ রানে তিনি ফিরলেও আরেক ওপেনার রনি তালুকদারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনে নামা শামীম। শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে এই জুটি বরিশালের ওপর উল্টো আক্রমণ চালায়। চার-ছক্কার মিছিলে পাওয়ার প্লে’তে এই জুটি স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৫০ রান। তবে অষ্টম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সানজামুল ইসলামকে ক্যাচ দেন রনি।

১৭ বলে ২৯ রানে তিনি ফিরলেও উইকেটে টিকে থেকে দ্রুত রান তুলতে থাকেন শামীম। তাকে সঙ্গ নেন অধিনায়ক নুরুল হাসান। কিন্তু ১১তম ওভারে দলীয় ১০০’র আগে মেহেদি মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউ হন নুরুল। ১৩ বলে ১৮ রানে অধিনায়ক বিদায় নিলেও নিকোলাস পুরানের সঙ্গে জুতি বাঁধেন শামীম। তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৫০ রান। কিন্তু খালেদ আহমেদের ফুল টস ডিলেভারিকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়ে সাকিবের তালুবন্দি হন পুরান। ৮ বলে ৫ রান করে ফেরেন পুরান। এরপরের ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে ছক্কা খেয়ে বসেন প্রিটোরিয়াস। শেষ ৪ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩৩ রান। সে সময় ক্রিজে শামীমের সঙ্গী দাসুন শানাকা। কিন্তু শামীমকে ফিরিয়ে ম্যাচে রোমাঞ্চ জাগিয়ে তোলেন খালেদ।

১৭তম ওভারে এই পেসারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে প্রিটোরিয়াসের হাতে ধরা পড়েন শামীম। ৫১ বলে ৭১ রানে থামে তার দারুণ এক ইনিংস। শেষ ৩ ওভারে জয়ের রংপুরের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২৯ রানের। সেই ওভারের তৃতীয় বলে রাব্বিকে ছক্কা হাঁকিয়ে রান ও বলের ব্যাবধান কমিয়ে আনেন শানাকা। কিন্তু সেই ওভারেই ডোয়াইন ব্রাভোকে বিদায় করে বরিশালকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। শেষ বলে এক রান নিয়ে ওভার শেষ করেন মাহেদি। শেষ ১২ বলে রংপুরের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৯ রান। সেই ওভারে দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রংপুরকে জয়ের কাছে নিয়ে যান মাহেদি।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৮ রান। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩ বল হাতে রেখেই রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন শেখ মাহেদি। মাহেদি ১৮ ও শানাকা ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

এদিন অবশ্য টস জিতে সাকিব আল হাসানের বরিশালকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। এই ম্যাচ দিয়ে রংপুরের একাদশে যুক্ত হন দুই ক্যারিবিয়ান তারকা নিকোলাস পুরান ও ডোয়াইন ব্রাভো। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার মিরাজ ও আন্দ্রে ফ্লেচারের ব্যাটে ভালো শুরু পায় বরিশাল। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৬ রান। একপ্রান্তে ঝড় তোলেন মিরাজ। তবে আরেক ওপেনার ফ্লেচার ছিলেন নিষ্প্রভ। রংপুরের স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এই ক্যারিবীয় ব্যাটার ১৬ বল খেলে করেন ১২ রান। তবে তিনে নেমে মিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। তাদের জুটিতে আসে ৬৯ রান।

দলকে ১১৫ রানে রেখে রংপুরের লঙ্কান পেসার শানাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ২১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর রানের চাকা কিছুটা ধীরগতির হয়ে পড়ে। চাপ সামলাতে গিয়ে শানাকার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪৮ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ রান করা মিরাজ। শেষদিকে শানাকা ও ব্র্যাভোর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপের মুখে পড়ে বরিশাল। তবে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন আফগান অলরাউন্ডার করিম জানাত। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ৩৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া লঙ্কান অলরাউন্ডার ভানুকা রাজাপক্ষে ১০ বলে করেন ১৭ রান করেন। বল হাতে রংপুরের শানাকা ২ উইকেট এবং রাকিবুল ১ উইকেট নেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...