পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মহাসচিব ওমর আইয়ুবকে প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে কথা বলার পর দলটির নেতা আসাদ কায়সার এ ঘোষণা দিয়েছেন। খবর সামা টিভির
তিনি বলেছেন, পিটিআইয়ের মহাসচিব ওমর আইয়ুব প্রধানমন্ত্রী পদে দলের প্রার্থী হবেন। আসাদ কায়সার বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে পিটিআই। এই বিক্ষোভের তারিখ আজই প্রকাশ করবেন পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা।
কায়সার বলেন, তাকে নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে আসা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে জেইউআই-এফ, এএনপি ও কিউডব্লিউপির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করার নির্দেশ দিয়েছেন ইমরান খান।
আসাদ কায়সার বলেন, আমরা সবাই একটি কৌশল তৈরি করতে চাই। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করা হয়েছে। এবারের এই নির্বাচন আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জালিয়াতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে ‘‘বিশ্বাসযোগ্যতার’’ ব্যাপক ঘাটতি ছিল।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটিতে কোনও দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ব্যাপক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
এর মাঝেই দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে পিএমএল-এন এবং পিপিপি তাদের সংসদীয় অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দলে ভেড়ানোর জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে।
দেশটির সংবিধানে বলা আছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি অথবা নির্বাচনের দিন থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে। দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট ৩৩৬টি আসন রয়েছে। যার মধ্যে ২৬৬টি আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় পরিষদে ৭০টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি নারীদের এবং ১০টি অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত। জাতীয় পরিষদে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান অনুযায়ী এসব আসন বণ্টন করা হয়।