মে ১৯, ২০২৪

কোনো দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের রিজার্ভ থাকতে হয়; কিন্তু এই মুহূর্তে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভও নেই।

গত ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি) সর্বশেষ যে বিবৃতি দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে— বর্তমানে পাকিস্তানের রিজার্ভে আছে মাত্র ৩০৯ কোটি ডলার এবং বর্তমান বাজারে এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে কেবল ১৮ দিনের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে দেশটি।

এসবিপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে আছে মোট ৮৭৪ কোটি ডলার; কিন্তু তার মধ্যে বিদেশি ঋণের কিস্তি বাবদ দেশটিকে শিগগিরই পরিশোধ করতে হবে ৫৬৫ ডলার। ফলে ওই অর্থ বাদ দিলে আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য বাকি থাকে ৩০৯ কোটি ডলার।

পাকিস্তানভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আরিফ হাবিব লিমিটেডের (এএইচএল) গবেষণা বিভাগের প্রধান তাহির আব্বাস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে রয়টার্সকে জানান, ১৯৯৮ সালে পর এই প্রথম এই পরিমান তলানিতে ঠেকেছে রিজার্ভ।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে পাকিস্তানের প্রয়োজন ডলারের নতুন প্রবাহ; আর সেজন আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি পুনরায় চালু হওয়া খুবই খুবই জরুরি।’

আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের আলোচনা গত কয়েক মাস ধরে স্থবির হয়ে ছিল। সম্প্রতি স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও আলোচনা শুরু করে দু’পক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল পাকিস্তানে পৌঁছায়।

ডলার–সংকটে দীর্ঘদিন ধরে ঋণ পরিশোধসহ বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্য রাখতে পারছে না পাকিস্তান। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালে পাকিস্তানকে ৬০০ কোটি ডলার ঋণসহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় আইএমএফ। দেশটিতে গত বছর বন্যার পর আরও ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানায় সংস্থাটি। তবে আর্থিক খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে ব্যর্থ হওয়ায় গত নভেম্বরে সেই অর্থ বিতরণ স্থগিত করে আইএমএফ।

পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে আইএমএফ। এসবের মধ্যে আছে কর বাড়ানো ও ভর্তুকি কমানো। তবে দেশটি শর্তগুলো মানতে রাজি হচ্ছে না। সরকারের আশঙ্কা, আগামী অক্টোবরের নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমি বিস্তারিত প্রসঙ্গে যাচ্ছি না। শুধু বলব, আমরা অকল্পনীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। আইএমএফের যে শর্তগুলো আমাদের মানতে হবে তা ধারণাতীত। তবে আমাদের শর্তগুলো মেনে নিতে হবে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *