মে ২০, ২০২৪

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বগুড়ার সাবেক প্যানেল মেয়র শামসুদ্দিন শেখ হেলাল, তার দুই স্ত্রী ও এক সন্তানের চারটি বাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল আদালতের নির্দেশে গণপূর্ত বিভাগ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এম শাহরিয়ার শহরের চকসূত্রাপুর এলাকায় তাদের মালিকানাধীন বাড়ি চারটি জব্দ করেন।

এ সময় দুদক কর্মকর্তারা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শামসুদ্দিন শেখ হেলাল বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়া দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে অর্থপাচার আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় শামসুদ্দিন হেলালসহ তার দুই স্ত্রী হেলেনা পারভীন ও ছেলে হোসাইন হাবিবের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং দুদক আইনের একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে হেলালের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার ৯২০ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া ১ কোটি ২ লাখ টাকার বেশি সম্পদ দ্বিতীয় স্ত্রী আবে জমজম নাজীর নামে স্থানান্তরের অভিযোগ এনে তাকেও আসামি করে দুদক। আর তার প্রথম স্ত্রী হেলেনা পারভীন ২ কোটি ৪১ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তবে সম্পদ বিবরণীতে তিনি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ১৮৯ টাকার ভিত্তিহীন হিসাব দেন।

চার মাস তদন্ত শেষে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ের তিনজন সহকারী পরিচালক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জুলাই বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ মোজাম্মেল হক চৌধুরী শামসুদ্দিন হেলালের চারটি বাড়ি ও ৯টি গাড়ি জব্দের আদেশ দেন। আদেশে বগুড়ার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চারটি বাড়ির ও বিআরটিসি বগুড়ার ডিপো ব্যবস্থাপককে ৯টি গাড়ির রিসিভার নিয়োগ করা হয়৷ ওই আদেশের প্রেক্ষিত আজ বাড়ি চারটি জব্দ করেছে প্রশাসন।

এ ছাড়াও গত ১৮ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে হুলিয়া ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এরপর থেকে শামসুদ্দিন হেলালসহ বাকি তিন আসামি পলাতক।

মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাদের নম্বর বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷

এ বিষয়ে জেলা দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছর আদেশ জারির পর আইনি সব প্রক্রিয়া মেনে শামসুদ্দিন হেলালের চারটি বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জব্দের আদেশে থাকা ৯টির মধ্যে ৩টি গাড়িও তিনি রিসিভারের কাছে হস্তান্তর করেছেন৷ পলাতক থাকায় বাকি ৬টি গাড়ির সন্ধানে কাজ চলছে।

গণপূর্ত বিভাগ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এম শাহরিয়ার বলেন, আদালতের আদেশে আজ বিকেলে চারটি বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এখন থেকে গণপূর্ত বিভাগ বাড়ি চারটির ভাড়া আদায় করবে। এই টাকা আদালতের নির্দেশে প্রতি তিন মাস পরপর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *