ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

শীতকাল অনেকেরই একটি প্রিয় ঋতু। শীতে ডায়েটের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য দৈনিক খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবারের বৈচিত্র্য থাকা প্রয়োজন।

▶ মাছ, মাংস, ডিমসহ প্রোটিন জাতীয় খাবার : পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এ সময় গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির প্রোটিন অর্থাৎ প্রাণিজ প্রোটিন যেমন, ডিম মাছ মাংস ইত্যাদি খেতে হয়। প্রতিদিন দুইবেলা মাছ খেতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ রাখুন। এছাড়া যারা এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা গরুর মাংস কিংবা মুরগির মাংস খেতে পারেন। গরুর কলিজা প্রোটিন জাতীয় খাবার যা হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।

▶ ডিম : ডিমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস যা মানবদেহকে সুস্থ ও কর্মকম রাখতে সাহায্য করে। ডিমের কুসুমে রয়েছে ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। গিঁটে গিঁটে ব্যথা যা ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর অভাবে হয়। ডিম খেলে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

▶ দুধ ও দই : শীতকালে অনেকের গিঁটে গেঁটে ব্যথা কিংবা হাত-পা কামড়ানি দেখা দিতে পারে। এর জন্য দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবারের বিকল্প নাই।

▶ ভিটামিন সি-যুক্ত সাইট্রাস ফল : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। লেবু কমলালেবু ও মালটা জাতীয় ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত।

▶ ফাইবারযুক্ত খাবার : গোটা শস্য, ওটস, আপেল, বাদাম ইত্যাদি ফাইবারযুক্ত খাবার ওজন ও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

▶ পালংশাক : পুষ্টিতে ভরপুর পালংশাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণের কারণে একে সুপার ফুড বলা হয়।

▶ স্যুপ : শীতে শরীর গরম রাখতে স্যুপের বিকল্প নেই। বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মুরগির স্যুপ এ সময় রাখতে পারেন।

▶ ভেষজ মসলা : আদা, তুলসী পাতা, পুদিনাপাতা, লবঙ্গ, এলাচ, দারুচিনি ইত্যাদি খাদ্য উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।

▶ আদা : ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে আদা সাহায্য করে। আদার চা, আদা, লেবু, চা কিংবা আদা লবঙ্গ ইত্যাদির এবং এর সঙ্গে একটু তুলসী পাতা দিলে রোগ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করবে।

▶ রসুন : রসুন হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও ঠান্ডা জ্বরে উপকারী।

▶ হলুদ : হলুদ অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। প্রাচীন আমল থেকে গা-ব্যথা নিরাময়ের জন্য কিংবা শীতকালে যেমন গিঁটে গিঁটে ব্যথা হয় তা নিরাময়ের জন্য দুধ কিংবা হলুদ দিয়ে চা খাওয়ার প্রবণতা ছিল।

▶ পুদিনা ও ধনে পাতা : পুদিনাপাতা দিয়ে কোনো স্যুপ এবং তরকারিতে যদি ধনেপাতা ব্যবহার করা হয় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সর্দি, ঠান্ডা, কাশি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো শারীরিক সমস্যাও দূর হবে। এ ছাড়া পুদিনাপাতার রস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদ হজম, মুখের দুর্গন্ধ, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা, অবসাদগ্রস্ততাসহ একাধিক শারীরিক সমস্যা দূর হবে।

▶ খেজুর : শীতকালে সুস্থ থাকতে চাইলে খাদ্য তালিকায় একটি বা দুটি খেজুর বা খেজুরের কোনো রেসিপি রাখতে পারেন।

▶ বাদাম : বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বাদামে রয়েছে ভালো মানের ফ্যাট।

▶ মূলা জাতীয় সবজি : বিট, মিষ্টি, আলু, গাজর, শালগম ইত্যাদি নানা রঙের সবজি খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

▶ পানি : শীতকালে পিপাসা না পেলেও শরীরে কিন্তু পানির চাহিদা রয়ে যায় আগের মতোই। শরীরে বিপাকক্রিয়া কার্যক্রম এবং কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণের প্রয়োজন। কম পরিমাণে পানি গ্রহণ করলে ইউরিন ইনফেকশন কিংবা শরীর ডিহাইড্রেট হতে পারে। শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিস্বল্পতা হলে ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে অতিরিক্ত চুল পড়তে থাকে। সুস্থ ত্বক ও সুস্থ চুল পেতে হলে পানি পান করতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...