মে ১৯, ২০২৪

পৃথিবীকে শিশুর নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল শিশুর ভেতর লুকায়িত পূর্ণ সম্ভাবনার উন্মেষ ঘটাতে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু ও পুরস্কার প্রতিযোগিতা – ২০২০ ও ২০২১ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি শিশুর একটা ব্যক্তিত্ব আছে ও এই ব্যক্তিত্ব প্রকাশের সুযোগ তৈরি করে দিন। আদর, স্নেহ, ভালোবাসার পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলুন।

শিশুরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারে, এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদেরকেও এগিয়ে আসার তাগিদ দেন আবদুল হামিদ।

শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তারাই বহন করবে দেশের দায়িত্বভার। এজন্য শিশুদেরকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।

রাষ্ট্র্রপ্রধান বলেন, সৃজনশীল মেধাসম্পন্ন প্রজন্ম গড়তে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব অপরিসীম। বিদ্যার্জনের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের সম্পৃক্ত করে তাদের মানসিক বিকাশের পথ সুগম করা জরুরি।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের শিশু নয় সকল স্তরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে বৈষম্যহীন মনোভাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

বর্তমান বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিশুদের নৈতিক শিক্ষাদানের প্রতিও গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন ঘরে ঘরে শিশুদের হাতে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক ডিভাইস। ফলে শিশুরা আজ মোবাইলে আসক্ত। তারা খেলার মাঠে বেশি যায় না, শিল্প-সাহিত্য চর্চা করে না, প্রকৃতি-পরিবেশ চিনে না।

তিনি প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক থেকে সন্তানদের রক্ষা করে নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে অভিভাবকদের প্রতিও অনুরোধ করেন।

শিশুদেরকে তিনি উপদেশ দিয়ে বলেন, দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তোমরা সবসময় সচেষ্ট থাকবে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ২০২০ এবং ২০২১ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ শিশু অংশগ্রহণ করে। ৩০টি বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এর মধ্যে প্রতিযোগিতার বিজয়ী ৪৭৪ জন শিশু পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। ২০২২ সালের ৬ জন ও ২০২১ সালের ৬ জন মোট ১২ জন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে শিশুর উন্নয়ন, বিকাশ ও সুরক্ষা বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র ও প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষে স্মারক গ্রন্থ ‌আলোর ফুল প্রকাশিত হয়।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল প্রমুখ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *