মে ৫, ২০২৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও সহমত। কিন্তু এগুলো পূরণে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য সময় প্রয়োজন।

শনিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বুয়েট উপাচার্য এ কথা বলেন।

এর আধাঘণ্টা আগে বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করেন। বিক্ষোভ শেষ করার আগে শিক্ষার্থীরা রোববারও টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন।

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। সকাল ৭টায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও গত বুধবার মধ্যরাতের পর বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান।

বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন, যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে শুক্রবার উত্তাল ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। পাঁচ দফা দাবিতে দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ করেন তারা।

তারা দাবি আদায়ে আজ ও আগামীকালের (৩০ ও ৩১ মার্চ) পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা পরীক্ষা স্থগিত করিনি। তারা (শিক্ষার্থী) বর্জন করেছেন। তারা পরীক্ষা স্থগিতের আবেদনও করেননি। তারা আবেদন করলে আমরা বিবেচনা করতাম। তারা এখানে ভুল করেছেন। পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু তারা পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী ঘণ্টা বাজবে, ছাত্ররা আসুক না আসুক—এমন ঘটনা বুয়েটে আগেও ঘটেছে। পরে তারা পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিবেচনা করতে পারে।

ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের বিষয়ে এখন আমরা চিন্তা করছি না। কারণ এটা নরমাল একটা প্রসিডিউর। নিয়মানুযায়ী যখন হওয়ার হবে।

ডিএসডব্লিউ বলেছেন, তার পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না। শিক্ষার্থীরা দাবি করতেই পারেন। কিন্তু দাবির মুখে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। সময় হলে আমরা নতুন ডিএসডব্লিউ নিয়োগ দেব।’

মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশের দায় কার—এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব যে কেন তিনি ঢুকতে দিলেন।

তার তো ঢুকতে দেওয়া উচিত হয়নি। গভীর রাতে কেউ (ক্যাম্পাসে) ঢুকলে এটা অবশ্যই অমানবিক বা অনিয়মতান্ত্রিক। কে ঢুকেছে, তাকে তো আগে চিহ্নিত করতে হবে।

চিহ্নিত না করে তো শাস্তি দেওয়া যাবে না। তার জন্য সময় প্রয়োজন। যদি কোনো নিরাপত্তারক্ষী বহিরাগত ব্যক্তিদের ঢুকতে দিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন, এমন মন্তব্য করে বুয়েট উপাচার্য বলেন, কিন্তু সকাল ৯টা, বেলা ২টা—এভাবে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। দাবি পূরণ করার জন্য যা যা করার, করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

নিয়মের বাইরে আমি কিছু করতে পারব না। নিয়মবহির্ভূতভাবে একজনকে বহিষ্কার করলে সেটা আদালতে টিকবে না। নিয়মের মধ্যে সবকিছু করার জন্য সময়ের প্রয়োজন। যেহেতু রোজার মাস, সময় একটু বেশি দেওয়া উচিত ছিল।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *