মে ৪, ২০২৪

কৃষ্ণ সাগরের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা ড্রোনের সঙ্গে রুশ যুদ্ধবিমানের সংঘর্ষের জেরে বিধ্বস্ত হয়েছে মার্কিন ওই ড্রোনটি। মার্কিন সামরিক বাহিনী এই ঘটনার জন্য সরাসরি রাশিয়ার দিকেই আঙুল তুলেছে।

তাদের দাবি, রাশিয়ান ফাইটার জেট আমেরিকান ড্রোনের ওপর জ্বালানি ফেলেছিল এবং এরপরে এটির সাথে সংঘর্ষ হয়। আর এর জেরেই বিধ্বস্ত হয় মার্কিন ওই ড্রোনটি। বুধবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রুশ সুখোই-২৭ জেট বিমানের সঙ্গে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের ধাক্কা লাগে। ফলে ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।

মার্কিন সামরিক বাহিনী বলছে, মঙ্গলবার রাশিয়ান একটি ফাইটার জেট কৃষ্ণ সাগরের ওপর আমেরিকান ড্রোনের ওপর জ্বালানি ফেলে এবং পরে এটিকে ধাক্কা দেয়। যার ফলে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়ার এই কৌশলকে ‘বেপরোয়া’ বলেও নিন্দা করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইউরোপীয় কমান্ড বলেছে, কৃষ্ণসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপরে দু’টি রাশিয়ান এসইউ-২৭ ফাইটার জেট মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনকে আটকে দেয় এবং একটি যুদ্ধবিমান ড্রোনের প্রপেলার কেটে দেয়।

মার্কিন কমান্ডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংঘর্ষের আগে একাধিকবার রাশিয়ার এসইউ-২৭ ফাইটার জেট মার্কিন ড্রোনের ওপরে জ্বালানি ফেলে দেয়। এমনকি এমকিউ-৯ ড্রোনের সামনে দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে রুশ ফাইটার জেট ওড়ানো হচ্ছিল। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও অত্যন্ত অপেশাদারভাবে রুশ ফাইটার জেটগুলো ওড়ানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে মার্কিন ওই ড্রোনটি বিধ্বস্ত করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে মস্কো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এমকিউ-৯ মনুষ্যবিহীন আকাশযানটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে উচ্চতা হ্রাস করে এবং পানির পৃষ্ঠের সঙ্গে ধাক্কা খায়।’

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, রাশিয়ার ওই দু’টি যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মার্কিন ড্রোনের কোনও ধরনের সংঘর্ষ বা ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেনি এবং রুশ বিমান তাদের অস্ত্রও ব্যবহার করেনি।

অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে তারা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে।

মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, কৃষ্ণসাগরে রুশ বিমানের মুখোমুখি হওয়া সাধারণ ঘটনা। প্রায়ই ঘটে থাকে। তবে এই ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ ও অপেশাদারভাবে বিমান চালানো হচ্ছিল, তা এই ঘটনায় প্রমাণিত হলো।

অন্যদিকে পশ্চিমা সামরিক সূত্র উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যম বলছে, ড্রোন ও ফাইটার জেটের মধ্যে সংঘর্ষের পরেই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে যেন আর সংঘর্ষ না হয় বা এই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেটি নিশ্চিত করতেই এই আলোচনা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *