এপ্রিল ২৭, ২০২৪

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাবনার মাহমুদুল (৫৫) নামের এক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার মা ও স্ত্রী।

রামেক হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় ভর্তি ছিলেন ডায়রিয়া আক্রান্ত মাহমুদুল। তার স্ত্রী সীমা বেগম ও মা নুরুন্নাহার বেগম জানান, মঙ্গলবার রাতে পাবনা থেকে এসেছেন। তখন চিকিৎসক ছিলেন না। সকালে যখন চিকিৎসক আসেন তখন মাহমুদুল মারা গেছেন।

বুধবার সকাল ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ভাতা বৃদ্ধি এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ৪ দফা দাবিতে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা কর্মবিরতি চলছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ধর্মঘটের কারণে চারদিন ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। বুধবার হাসপাতালে গিয়ে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি।

কর্তৃপক্ষের দাবি, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা না থাকলেও মিড-লেভেলের চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে হাসপাতালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমবিবিএস শেষ করে রামেক হাসপাতালে ২১০ ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে ইন্টার্নশিপ করছেন। এছাড়া এফসিপিএস ও এমডি কোর্সের আরও ৬০ জন চিকিৎসক কোর্স করছেন। তারা গত ২৪ মার্চ থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন।

নুরুন্নাহার জানান, বিনা চিকিৎসায় তার ছেলে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পরে দুজন নার্স ইসিজি মেশিন নিয়ে পরীক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিন স্ট্রোক করেছেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার সময় এই হাসপাতালে এনেছেন। তবে কোনো ডাক্তার দেখেননি। ছেলের বউ রোকসানা বেগম জানান, শ্বশুরকে সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো ডাক্তার দেখেননি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ১ হাজার ২০০ শয্যার হাসপাতালের বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২ হাজার ৪৯৮ জন। মঙ্গলবার নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭৯০ জন, মারা গেছেন ৩৪ জন।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মেদ বলেন, হাসপাতালে রোগীর সুস্থতার হার ৯৮ শতাংশ। মারা যায় ২ শতাংশেরও কম। দিনে ৩০ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে না। মিড লেভেলের চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে সব সামলাচ্ছেন। তবে দ্রুত সমস্যার সমাধান হও

য়া উচিত।

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *