নভেম্বর ২৩, ২০২৪

শিল্পায়ন নয়, ঢাকা শহরের আশপাশের ইটভাটা ও উন্মুক্ত নির্মাণকাজ রাজধানীতে বায়ুদূষণের জন্য প্রধানত দায়ী বলে মনে করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বায়ু ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সেমিনারটি পরিচালনা করেছেন। যেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় বাংলাদেশে শিল্পায়ন খুব বড় আকারে হয়নি, তারপরও কেন এতো বায়ু দূষণ? উন্নত দেশগুলোতে বড় আকারের শিল্পায়ন হলেও দূষণ এতো কম কি করে হয় ? তার মানে বায়ুদূষণের জন্য শিল্পায়নকে দায়ী করতে পারবো না। আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করতে হবে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় রাজধানীর বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হচ্ছে ঢাকা শহরের আশা-পাশের ইটের ভাটা। রাজধানীর বায়ুদূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশে-পাশে ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। ইটের ভাটার কারণে আকাশে দূষণ ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর একটি বিষয় উন্মুক্তভাবে নির্মাণ কাজ করা। বিদেশে উন্মুক্তভাবে বালি বা মাটি রাখতে কিংবা সরবরাহ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে ওই ব্যবস্থা নেই।

কংক্রিট ইটের ব্যবহার বৃদ্ধি ওপর জোর দিয়ে জসিম উদ্দীন বলেন, কংক্রিট ইটে খরচ ও দূষণের পরিমাণ কমে যাবে। সেজন্য কংক্রিট ইটের কাঁচামালের বিষয়ে আলাদা করে এনবিআর বিশেষ সুবিধা দিতে পারে। বর্তমানে ৬৯ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল কাঁচামাল হিসেবে ৩ এমএম পাথরে ৫ শতাংশ শুল্ক করা। তাহলে ৫ থেকে ৭ টাকা কংক্রিট ইট পাওয়া যাবে। যা সাধারণ ইটের চেয়ে ভালো। এটাকে প্রমোট করা দরকার। এখন যারা কংক্রিটের ইট বানাচ্ছে দাম বেশি পড়ে। তাই জনপ্রিয় হয় না। জনপ্রিয় পণ্য হওয়ার জন্য দাম বড় ভূমিকার রাখে। সেজন্য উৎপাদন খরচ কমাতেই হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের বর্জ্যব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। না নিতে পারলে দূষণ আটকানো যাবে না। শহরে বাইরে দেখা যায় রাস্তার পাশে বর্জ্যের স্তূপ। ওখানে তো বর্জ্য রাখার কথা নয়। আর একটি হচ্ছে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা। খাল-বিল বন্ধ করে রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। এক সময় ব্রিজ ছিল, রাস্তার সুবিধার জন্য কালভার্ট করে চিরদিনের জন্য নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেওয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটাই বাস্তবতা। কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই। পার্টনারশিপের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, যানবাহনের দূষণ কমাতে হলে আমাদের ইলেকট্রিক বাহনের দিকে যেতে হবে। কিন্তু বর্তমানে ইলেকট্রিক কারের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রেখেছে বিআরটিএ, কাস্টমসে আলাদা এসএস কোডও নেই। আসলে যারা যেখানে কাজ করার কথা, তারা সেভাবে করছেন না। সবচেয়ে বড় বিষয় মানুষকে সচেতন করা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...