মে ১৯, ২০২৪

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ২৬টি বিরোধী দলের জোট (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়ান্স) বা ‘ইন্ডিয়া’। একই বিষয়ে আলাদা করে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা ‘বিআরএস’।

বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এমপি সাংসদ গৌরব গগৈ। বিআরএসের হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন নামা নাগেশ্বর রাও এমপি।

জানা গেছে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় আলোচনা হবে না। নিয়ম অনুযায়ী ৫০ জন এমপির সমর্থনসহ সেই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখবেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তারপরই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য নির্দিষ্ট দিন এবং সময় বরাদ্দ করবেন তিনি। আজ তেলেঙ্গানার শাসকদল ‘বিআরএস’ ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’য় অংশ নেয়নি।

বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদী সরকারের কোনও সঙ্কট তৈরি হবে না। কারণ, খাতায় কলমে ৩৩২ জন এমপির সমর্থন রয়েছে শাসক পক্ষের দিকে। বিরোধী জোটের অবশ্য বক্তব্য, মণিপুর নিয়ে সরকারের ‘নীরবতা’ ভাঙাতেই তারা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। এ প্রসঙ্গে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক শিবসেনার তরফে বলা হয়েছে, মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী যাতে সংসদে আসেন, সেই কারণেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে।

ওই ইস্যুতে তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন এমপি অশান্ত মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে বিবৃতি দেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের দাবি- প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে এই বিষয়ে কথা বলতে হবে। কারণ, এটা এখন আর জাতীয় ইস্যু নয়, এটা আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে গেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তিনি সংসদে আসছেন না। তাই প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে আনানোর জন্য যা যা আইনগত পদ্ধতি সেগুলো আমরা করছি। আমরা জানি অনাস্থা প্রস্তাব আনলে সরকার পড়ে যাবে না, কারণ তাদের কাছে সংখ্যা আছে। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাব আনলে প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হবেন আসতে। এবং তখন মণিপুর নিয়েও আমাদের প্রশ্ন থাকবে। তাই প্রধানমন্ত্রী যখন সোজা পথে সংসদে আসছেন না, তখন ঘুরপথে তাকে সংসদে বাধ্য করার জন্য, ভারতবর্ষের মানুষ শুনতে চাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মনের কথা। ভারতবর্ষের মানুষের মনের ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে ইন্ডিয়া জোট অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।’

অন্যদিকে, বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির উপর মানুষের আস্থা রয়েছে। বিরোধীরা আগেও অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। কিন্তু মানুষ ওদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে গত ৯ বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হল। এর আগে ২০১৮ সালেও কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু এই প্রস্তাব ভেস্তে যায়। এর সমর্থনে মাত্র ১২৬টি ভোট পড়েছিল। অন্যদিকে, ৩২৫ জন এমপি এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *