মে ১৯, ২০২৪

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলা নিয়ে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সরকার বারবার বলছে এই মামলা সরকার করে নাই৷ কিন্তু এই মামলা সরকার করলো নাকি শ্রমিক করলো আপনারা তো কিছুই বললেন না৷ কলকারখানা অধিদপ্তর সরকারের৷ এ মামলা তারাই করেছে৷ শ্রমিকরা এ মামলা করে নাই৷

রোববার (২৮ জানুয়ারি) কাকরাইলে শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি৷ এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায়ে ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিলও করেন তিনি৷

এ মামলার শিকার কিভাবে হলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, আমরা একটা স্বপ্নের পেছনে ছুটেছি৷ এই স্বপ্ন বুনতে গিয়ে কারো বিরাগভাজন হয়েছি৷ কিন্তু কেন এই মামলা করলো সেটা বলতে পারবো না৷ আমার প্রত্যাশা হচ্ছে আমরা নতুন পৃথিবী গড়বো৷ তিন শূন্যের পৃথিবী গড়বো৷ এ মামলার সাজা একটি ছোটখাটো জিনিস৷ এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই৷

ড. ইউনূস বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে পাল্টে ফেলতে হবে৷ শিক্ষার্থীরা চাকরির জন্য লেখাপড়া করছে কিন্তু উদ্যোক্তা হবার জন্য লেখাপড়া করছে না৷ তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ৷ তারাই আগামীর পৃথিবী গড়বে৷ তাদের নিয়েই আমরা থ্রি জিরো ক্লাব করেছি৷ দেড় বছর আগে শুরু করা থ্রি জিরো ক্লাব আজ ৩৫টি দেশে শুরু হয়েছে৷ আমাদের সামনে অনেক কাজ রয়েছে৷ আজ তরুণরা এগিয়ে আসছে৷ সারা বিশ্ব থেকে এর বড় একটি সমর্থন পাচ্ছি৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে আসছে৷ ১০৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার সৃষ্টি করা হয়েছে৷ ৩৭টি দেশে ইউনূস সেন্টার করা হয়েছে৷ রাশিয়াতেও ইউনুস সেন্টার শুরু হচ্ছে৷ আজকে আমরা যে সমস্যা ফেস করছি সেটা একাডেমিকরা সৃষ্টি করেছে তাদেরকেই এর সমাধান দিতে হবে৷ তা না হলে এটা পাল্টাবে না৷ এ কারণেই আমরা একাডেমিকদের সঙ্গে কাজ করছি৷

এদিকে ড. ইউনূসের আইনজীবী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আজকের আদালত আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে এবং নিম্ন আদালতের সম্পূর্ণ রায়কে সাসপেন্ড করেছে৷ একইসঙ্গে আগামী ৩ মার্চ নিম্ন আদালতের সেসব নথি আনার জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে৷ আর আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয়েছে৷

তিনি বলেন, আজকে আমরা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেছি এবং আপিল করেছি৷ রাষ্ট্রীয় সর্বমহলে এমনকি বিদেশিদের কাছেও বলা হচ্ছে এ মামলা সরকার করে নাই৷ এ মামলা শ্রমিক করেছে৷ কিন্তু ঘটনাটা সঠিক নয়৷ সরকার তার প্রতিষ্ঠান কলকারখানা অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ মামলা করেছে৷ শ্রমিলদের চাকরি স্থায়ী করা হয় নাই, বর্ধিত ছুটি দেওয়া হয় নাই এবং লাভ্যাংশের ৫ শতাংশ দেওয়া হয়নি এমন তথ্য দিয়ে এ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে৷ সরকারি নির্দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান এ মামলা করেছে৷

এ মামলায় যে রায় হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ৷ ৩০৭ ধারা অনুযায়ী এ মামলায় শাস্তি দেবার বিধান নেই৷ কারণ লেবার আইনের ২৩৬ ধারা অনুযায়ীই এ মামলার শাস্তির বিধান আছে৷ এ ধারাতেই বলা আছে যদি বকেয়া থাকে তাহলে সেটা পরিশোধের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে৷ এটা না করলে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা৷ প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা করে৷ পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি আইন অনুযায়ী এটা আদায় করা হবে৷ কিন্তু সেসব ভায়োলেট করে বিশ্বের কাছে নন্দিত নোবেলজয়ী ড. ইউনুস ও তার বন্ধুদের সামাজিক ব্যবসা ধ্বংস করার জন্য এ সাজা দেওয়া হয়েছে৷

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *