মে ২০, ২০২৪

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে বকেয়া ৫৮২ কোটি টাকার ভ্যাট। বকেয়া ভ্যাট আদায় নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বারবার তাগিদ দিয়েও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও বেবিচক কর্তৃপক্ষ বলছে, বকেয়া মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) অধিকাংশই বিমানের কাছে পাওনা।

এ বিষয়ে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বেবিচক। যার অংশ হিসেবে ভ্যাট অফিস থেকে তাগিদপত্র দিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গত ১১ ডিসেম্বর এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে একটি যৌথসভায় এ বিষয়ে আবারও আলোচনা হয়। যেখানে ঢাকা উত্তর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কাছে বকেয়া ভ্যাট আদায়ে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টি উঠে আসে। এর পরপরই ঢাকা উত্তর কমিশনারেট এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সিভিল এভিয়েশনের দাখিল করা দলিলপত্র বেবিচক ও ঢাকা উত্তরের ভ্যাট অফিসের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটি দ্বারা পরীক্ষা করে ৪১৭ কোটি টাকা বকেয়া ভ্যাটের বিষয়ে একমত হওয়া গেছে। এর বাইরে অতিরিক্ত আরও ১৬৫ কোটি টাকার বিষয়ে আলোচনা করেছে যৌথ কমিটি। দীর্ঘ ১০ বছরে ওই বকেয়া জমেছে। সভায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে বকেয়া ভ্যাট পরিশোধ করার পাশাপাশি ইভিডিএসর আলোকে সফটওয়্যার তৈরি করে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোকে সংযুক্ত করার তাগিদ দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, এনবিআরে সভা হওয়ার পরপরই ঢাকা উত্তরের ভ্যাট অফিসেও কমিশনারের নেতৃত্বে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে তাগিদপত্র দেওয়ার পাশাপাশি বকেয়া ভ্যাট আদায়ে সক্রিয় আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী বলেন, সিভিল এভিয়েশনের দাখিল করা দলিলপত্র যৌথ কমিটি দ্বারা পরীক্ষা করে বকেয়া পাওনার পরিমাণ প্রায় ৪১৭ কোটি টাকা নিরূপণ করা হয়েছে। এছাড়া ওই বকেয়া পাওনার বাইরে অতিরিক্ত আরও বকেয়া বাবদ ১৬৫ কোটি টাকার বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি।

গত ১১ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত বেবিচক কর্তৃপক্ষের পরিচালক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া হিসাবে দাবি করা অধিকাংশ পাওনাই মূলত এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট সময়ে আদায় হয়নি। এছাড়া পাওনা হিসাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা ও দলিলপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।

বেবিচক বলছে, বকেয়া ভ্যাট আদায়ের দায়ভার কি শুধুমাত্র তাদের ওপরেই বর্তায়। ভ্যাট কর্তৃপক্ষ চাইলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

বকেয়া ভ্যাট আদায়ের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়াও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে তাদের কাছে জমা করা বকেয়া ভ্যাট পরিশোধ এবং ইভিডিএসর আলোকে সফটওয়্যার তৈরি করে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোকে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

এছাড়া ওই সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- বকেয়া ভ্যাট আদায়ের জন্য ঢাকা উত্তর কাস্টমস এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনারেট উদ্যোগ গ্রহণ ও তাগিদপত্র দেবে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে বকেয়া ভ্যাট দিতে হবে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ উৎসে ভ্যাট আদায় কর্তন করে ভ্যাট ইভিডিএস’র আলোকে সফটওয়্যার তৈরি করে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোকে সংযুক্ত করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *