বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মহিলা ঐক্য পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর এর নবনির্বাচিত সভাপতি শ্যামলী মুখার্জী ও সাধারণ সম্পাদক জয়ন্তি বর্মন।
১২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে সভাপতি শ্যামলী মুখার্জী ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শ্যামলী মুখার্জী (১৩ ভোট)। বিপরীতে সভাপতি পদে কানন রানী সরকার-০ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ন্তী বর্মন ভোট -১১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে মল্লি বেপারী পেয়েছেন ২ ভোট।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। উদ্ভোধন করেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত ও বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের শ্রীমতি জয়ন্তী রায়, শ্রীমতি মঞ্জু ধর, শ্রীযুক্ত মনীন্দ্র কুমার নাথ, শ্রীযুক্ত জয়ন্ত কুমার দেব, এ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, শ্রীমতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য, শ্রীমতি মধুমিতা বড়ুয়া, এ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা (এম.পি), শ্রীযুক্ত অতুল চন্দ্র মন্ডল।
বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শ্রীমতি কানন রাণী সরকারের সভাপতিত্বে ও শ্রীমতি শ্যামলী মুখার্জীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমতি দিপালী চক্রবর্তী।
সম্মেলনে আলোচক নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নারীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি। তবে সংখ্যাগুরু হোক বা সংখ্যালঘু অংশই হোক একটি আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা ও একটি সুস্থ জাতি গঠনে কিন্তু সকলের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নারী ও পুরুষের ভূমিকা সমান। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু ও বৌদ্ধ নারীরা এখনও তাদের পৈত্রিক ও স্বামীর সম্পত্তিতে কোনো অধিকার পায় না। যদিও বর্তমান সরকার কিছুকিছু ক্ষেত্রে, যেমন, বাধ্যতামূলক না হলেও বিবাহ নিবন্ধন আইন প্রণয়ন ও দুইএক ক্ষেত্রে হাইকোর্টের রায় প্রদানের মাধ্যমে বিধবা নারীদের স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকারের বিষয়ে অনুকূল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। তবে এখনও এসব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ কোনো আইন প্রণয়ন হয় নাই। এমতাবস্থায় সরকারের “নারীর ক্ষমতায়ন ও সমঅধিকার” নামে যে লক্ষ্যটি রয়েছে, তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
বক্তারা আরো বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বর্তমান সরকারি দল বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যেমন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাপর্ণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন ইত্যাদি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আবারও একটি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসছে। এমতপ্রেক্ষিতে, সরকারের প্রতিশ্রুত উক্ত আইনসমূহ ও বিষয়াদি যথাযথভাবে আদায়ের জন্য বাংলাদেশের সকল ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এক জোগে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানানো হয়।