যদিও যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) স্বীকৃতি দেয়নি, তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামে যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি, সেটি ন্যায়সঙ্গত মনে করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মনে করে এটা (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) ন্যায়সঙ্গত। যুক্তরাষ্ট্র যদিও এখন পর্যন্ত আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু আমি মনে করি সামনের দিনগুলোতে এটা ব্যাপক তাৎপর্য ফেলতে পারবে।’
ইউক্রেনে পুতিন যে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তা ইতোমধ্যে ‘পুরোপুরি স্পষ্ট’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর দখল করা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং দেশটির শিশু অধিকার কমিশনের কর্মকর্তা মারিয়া অ্যালেক্সিয়েভনা এলভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে শুক্রবার জারি করেন আইসিসি। এক বিবৃতিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি জানিয়ে আইসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলো থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে পুতিন ও বেলোভা জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়া ব্যাপক পরিসরে যুদ্ধাপরাধে জড়িত—জাতিসংঘের তদন্ত দলের এমন অভিযোগের এক দিন বাদেই এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোনো ‘তাৎপর্য নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। গতকাল ওই পরোয়ানা জারির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ মন্তব্য করেন তিনি। মারিয়া বলেন, আইসিসির রোম সংবিধির অংশ নয় রাশিয়া। তাই এই আদালতের অধীনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতাও নেই।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। আইসিসি যা করতে পারে তা হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তারের পরে তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে তার কার্যালয়ে বিচারের জন্য হাজির করা।
আইসিসি বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তিটি রোম সংবিধি নামে পরিচিত। রাশিয়া এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি। তাই পুতিন বা মারিয়া বেলোভাকে আপাতত এই আদালতের হাতে সমর্পণের কোনো সুযোগ নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, পুতিন রাশিয়ার মতো একটি পরাশক্তির রাষ্ট্রপ্রধান।