নভেম্বর ১৫, ২০২৪

তিস্তার পানি প্রত্যাহারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে আরও দুটি খাল খননের বিষয়টি সতর্কভাবে পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টাও চলছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে খাল খনন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।

ঢাকার পক্ষ থেকে নয়াদিল্লিকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র জানান, তিস্তা সংক্রান্ত খবরটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। খাল খননের বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; যৌথ নদী কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং আলোচনা করছে। এ ব্যাপারে আমরা সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। খবরটির সত্যতা যাচাই করছি।

সেহেলী সাবরীন বলেন, তিস্তা নদীর পানির ওপর বাংলাদেশের বৃহৎ জনগণের জীবন ও জীবিকা নির্ভর করে। সে কারণে অনেক বছর ধরে আমরা তিস্তা নিয়ে ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যমান যে চমৎকার সম্পর্ক, সেটি বিবেচনায় রেখে আমরা আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে চেষ্টা অব্যাহত রাখব। আমরা আশা রাখছি, আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যাটির সমাধানে যাব।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, এটা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং যৌথ নদী কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাব বা পেপার ঠিক করে তারপর ভারতীয় পক্ষের কাছে জানতে চাইব। এরপর পরবর্তী পদক্ষেব নেব।

নয়াদিল্লিকে চিঠি পাঠাচ্ছে ঢাকা

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের জাতিসংঘের পানি সম্মেলনে যোগ দেওয়া নিয়ে বহুপক্ষীয় অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সভা শেষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, তিস্তায় নতুন করে আরও দুটি খাল খননের বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ বিভাগ থেকে আরও দুইটি খাল খননের বিষয়ে ভারতের পত্রিকার সংবাদ আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠাব।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) চিঠিটি সই করে পরবর্তীতে নয়াদিল্লিতে পাঠানো হবে।

পশ্চিমবঙ্গের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে উৎকণ্ঠায় ঢাকা

পশ্চিমবঙ্গের এ পদক্ষেপ ঢাকা তথা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। কারণ তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জন্য এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ।

সোমবার (১৩ মার্চ) ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় আরও দুটি খাল খননের জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগ প্রায় এক হাজার একর পরিমাণ জমির মালিকানা পেয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে সেচ বিভাগকে জমির মালিকানা হস্তান্তর করেছে। এ জমির মাধ্যমে তিস্তার পূর্ব তীরে দুটি খাল তৈরি করতে পারবে প্রশাসন।

ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশে পানি একটি আবেগপূর্ণ বিষয়। যদিও পরিকল্পিত জলবিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোর সবগুলোই রান-অব-দ্য-রিভার প্রকল্প, যার অর্থ জলবিদ্যুৎ তৈরির জন্য নেওয়া পানি আবার নদীতেই ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু একজন নদী বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পানি সেচের জন্য পাওয়া যাবে না।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...