ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল টানা প্রায় ৫ মাস ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশটির নিরলস এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রোববার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দুটি বাড়িতে বোমা হামলা চালালে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজা শহরের উত্তরে জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এবং সাফতাউই এলাকায় দুটি বাড়ি লক্ষ্য করে এই বিমান হামলা চালানো হয়।
চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াফা বলেছে, হামলার পর ২০ জনের মৃতদেহ উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৪১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৭০০ জন।
এদিকে ইসরায়েল গাজার ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে এবং এই পদক্ষেপ গাজার ফিলিস্তিনিদের বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা শহরের দক্ষিণে মানবিক সহায়তা নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে অন্তত ১১৬ জন নিহত হন।
গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ১৭৭ জন আহত হয়েছেন। অনেক লোক এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেওয়া একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।