মে ৫, ২০২৪

কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে আগ্রহী চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সম্প্রতি কিমের উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে চিঠিতে শি জিনপিং কি লিখেছেন— সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি কেসিএনএর প্রতিবেদনে। দু’দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে কোনো পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন কিনা, সে সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি।

তবে ধারণা করা হচ্ছে— কোরীয় উপসাগর ও পীত সাগর অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির চরম বৈরী সম্পর্ক এবং তার জেরে পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলে সম্ভাব্য অস্থিরতা প্রতিরোধ করতেই উত্তর কোরিয়াকে নিজের বলয়ভুক্ত করতে চাইছে চীন।

আবার অনেক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে হুমকির মধ্যে রাখা এবং তার জেরে কোরীয় উপসাগরে দক্ষিণ কোরিয়া ও ‍যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার ঘোষণাই জিনপিংয়ের এই আগ্রহের মূল কারণ।

এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো যেসব নির্ভরযোগ্য মিত্র রয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। গত কয়েক বছরে এই মিত্রতা আরও নিবিড় হয়েছে এবং এজন্য দায়ী মূলত উত্তর কোরিয়া থেকে আসা নিরাপত্তা হুমকি।

গত দু’তিন বছর ধরে কোরীয় উপসাগর ও পীত সাগর অঞ্চলে নিয়মিত নিজেদের তৈরি দূর-মাঝারি ও স্বল্পমাত্রার বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। বিভিন্ন সময় দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সমুদ্রসীমা গিয়ে পড়েছে এসব ক্ষেপণাস্ত্র।

২০২২ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রায় প্রতি মাসেই একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। গত ২ নভেম্বর উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন পাল্লার অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। সেসবের মধ্যে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমার কাছাকাছি পতিত হয়। গত ১৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের সমুদ্রসীমায় পতিত হয় সেই ক্ষেপণাস্ত্রটি।

তার আগে গত ২ মাসে প্রায় ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া, সেসবের সবই অবশ্য ছিল স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।

কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে উত্তর কোরিয়া আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন। চীন, রাশিয়া, ইরান ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে উত্তর কোরিয়ার; তবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন সবচেয়ে বেশি দেশটির।

অতীতে চীন এবং উত্তর কোরিয়ার মাঝে ঘনিষ্ট কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে তাতে ফাটল ধরে। পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ প্রকল্পের জেরে ওই বছর উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘ। সেই নিষেধাজ্ঞায় চীনের সমর্থন ছিল। তারপর থেকেই দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক শীতল।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *