মে ২০, ২০২৪

পুঁজিবাজারে আসার পথে আটকে থাকা এএফসি হেলথ লিমিটেড এবার ঋণ খেলাপের দায়ে ফেঁসেছে। ইস্টার্ন ব্যাংকের ৭৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে ব্যাংকটির করা মামলায় কোম্পানির সাত পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন, এএফসি হেলথ লিমিটেডের পরিচালক জুয়েল খান, মো. আফজল, মো. জিয়াউদ্দিন, সাইদুল আমিন, মো. শামসুদ্দোহা তাপস, এসএম সাইফুর রহমান ও মাহবুব আরব মজুমদার।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক মো. মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

আসামিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশেষ পুলিশ সুপারের (ইমিগ্রেশন) কাছে আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ, এএফসি হেলথ লিমিটেড প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য আবেদন করলে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থা তার অনুমোদন দেয়। এর কয়েকদিনের মধ্যে পরবর্তীতে ভারতের ফোর্টিস হাসপাতাল ও এসকর্ট হাসপাতাল বিএসইসির কাছে অভিযোগ করে যে এএফসি হেলথ অনুমোদন ছাড়া অনেক জায়গায় তাদের নাম ও লোগো ব্যবহার করছে। এএফসির সাথে তাদের একটি চুক্তি থাকলেও তার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে, আর চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য টাকাও পরিশোধ করেনি এএফসি। এর প্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও সাময়িকভাবে স্থগিত করে। এখনো এটি স্থগিত আছে।

এদিকে জানা গেছে, ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ বছর আগে নেওয়া জামানতবিহীন ঋণ পরিশোধ না করায় ২০২৩ সালে মামলা করে ব্যাংকটি।

বুধবার দুপুরে ব্যাংকের পক্ষে আগ্রাবাদ শাখার কর্মকর্তা মো. মারুফ বিন আলম ফয়সাল অর্থঋণ আইন ২০০৩-এর ৫৭ ধারায় আসামিদের পাসপোর্ট জব্দ এবং আদালতের আদেশ ছাড়া দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। শুনানিতে ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, এই মামলায় ঋণের বিপরীতে কোনও স্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই। আসামিদের পার্সোনাল গ্যারান্টিতে ঋণ দেওয়া হয়েছিল। খেলাপি ঋণ ইতোমধ্যে দুবার পুনঃতফসিল করা হয়েছে। এরপরও পরিশোধ করেননি আসামিরা। উল্টো মামলা সম্পর্কে জেনে দেশত্যাগের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা দেশত্যাগ করলে এই খেলাপি ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’

আদালত সূত্র জানায়, আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন ঋণের বিপরীতে আসামিদের কোনও স্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই। অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন বহু মামলায় জামানতবিহীন ঋণখেলাপিরা দেশত্যাগ করায় হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় এএফসি হেলথ লিমিটেডের সাত পরিচালকের পাসপোর্ট মামলার পরবর্তী শুনানির মধ্যে আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হলো। তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের বিশেষ শাখা, ঢাকা বরাবর আদেশের কপি পাঠানো হলো।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *