মে ৬, ২০২৪

টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে দীর্ঘ সময় পার হলেও তা বন্ধের কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও বেলারুশ।

একইসঙ্গে ইউক্রেনে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ‘অত্যন্ত আগ্রহ’ও প্রকাশ করেছে দেশ দু’টি। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো চীন সফর করেছেন এবং বুধবার বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। পরে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেন নিয়ে নিজেদের ওই অবস্থানের কথা জানান তারা।

প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসানের জন্য বেইজিংয়ের শান্তি পরিকল্পনাকে ‘পুরোপুরি সমর্থন’ করে। জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়ে চীন গত সপ্তাহে শান্তি আলোচনার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

মূলত চীন তার শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করার জন্য পাঠানোর কয়েকদিন পরেই বেইজিংয়ে সফর করলেন লুকাশেঙ্কো। এছাড়া এই একই সময়টাতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

বিবিসি বলছে, ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে বুধবার চীন ও বেলারুশ ‘গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে’ বলে জানিয়েছে বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বেল্টা। একইসঙ্গে উভয় দেশ ‘ইউক্রেনে যত দ্রুত সম্ভব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত আগ্রহ’ জানিয়েছে বলে এতে বলা হয়েছে।

অবশ্য আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সহায়তা করেছেন এবং পর্যবেক্ষকরা তার বেইজিং সফরকে রাশিয়া ও তার মিত্রদের সাথে চীনের বন্ধনের আরেকটি প্রতীক হিসাবে দেখছেন।

এছাড়া বেলারুশের এই প্রেসিডেন্ট চীনের ঘোষিত শান্তি পরিকল্পনার প্রশংসাও করেন। চীনের ঘোষণা করা ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনায় ‘সকল দেশের সার্বভৌমত্বের’ প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

যদিও রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে বলে সেখানে কিছুই উল্লেখ নেই এবং ইউক্রেন ইস্যুতে ‘একতরফাভাবে নিষেধাজ্ঞা’ ব্যবহারের নিন্দাও করা হয়েছে। মূলত এই নিন্দার মাধ্যমে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেছে বেইজিং।

প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার বিষয়ে চীন যে উদ্যোগটি উত্থাপন করেছে তা সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করেন’ তিনি। শি জিনপিংকে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষ এড়াতে বা প্রতিরোধ করতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো প্রথম এবং সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

অন্যদিকে লুকাশেঙ্কোর সাথে বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট ‘স্নায়ু যুদ্ধের সকল মানসিকতা’ পরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। শি জিনপিং বলেছেন, দেশগুলোকে বিশ্ব অর্থনীতির ‘রাজনীতিকরণ’ বন্ধ করা উচিত এবং ‘এমন কিছু করা উচিত যা যুদ্ধবিরতি, যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়তা করবে’।

এছাড়া চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে চীন-বেলারুশের সম্পর্ককে ‘সব আবহাওয়ার ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিরল এই শব্দটি চীন এতদিন শুধুমাত্র অন্য একটি দেশের জন্য ব্যবহার করে এসেছে। আর সেটি হচ্ছে পাকিস্তান।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *