বার্সেলোনার একটি নাইটক্লাবে তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে সাড়ে ৪ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানি আলভেজ। আদালতের নির্দেশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় তিনি সাজা কম পেয়েছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। অন্যদিকে সাবেক স্ত্রী জোয়ানা সাঞ্জের সঙ্গেও বিচ্ছেদ মামলা চলছে আলভেজের। যদিও রায় ঘোষণার আগে জোয়ানাকে একটি চিঠি পাঠান তিনি।
জোয়ানা সাঞ্জ সেই চিঠির একটি ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেছিলেন। যদিও পরমুহূর্তেই সেটি সরিয়ে নেন তিনি। আলভেজের সঙ্গে তার বিচ্ছেদের মামলা এখনও চলমান হলেও, এই ফুটবলারের সঙ্গে আর না থাকার কথা জানিয়েছিলেন সাঞ্জ। ফলে তাদের সম্পর্কের তিক্ততা যে এখনো আছে, সেটাই ধারণা করা হচ্ছে!
৪০ বছর বয়সি সাবেক বার্সা তারকার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রায় দেওয়া হয়েছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দায়ের করা একটি ধর্ষণ মামলায়। সেই রায়ের আগে তিনি সাবেক স্ত্রী জোয়ানাকে আবেগঘন একটি চিঠি পাঠান। যা প্রকাশ করা হয় ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ও’গ্লোবোর লাইফস্টাইল ক্যাটাগরি ‘ভগ’–এ। তাদের বরাতে প্রতিবেদন করেছে গোল ডটকম। গত সেপ্টেম্বরে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেও, ‘ভুল হয়েছে’ উল্লেখ করে সেটি সরিয়ে নেন জোয়ানা।
পরে ও’গ্লোবো চিঠিটি তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করে। আলভেজের পক্ষ থেকে এসেছে দাবি চিঠিতে লেখা ছিল, আমি যে স্বপ্ন দেখেছি এবং এখনও যে স্বপ্ন দেখছি, সেখানে পুরো পথই তোমার সঙ্গে পাড়ি দিতে চাই। আমি ভুল কাউকে ভালবাসিনি, হ্যাঁ, সেটি তুমিই। এমন কোনো দিন, মুহূর্ত কিংবা পরিকল্পনাও নেই, যেখানে তুমি নেই। আমি সবসময় সেই দিনের জন্য প্রার্থনা করি, যেদিন তোমাকে ঘুম থেকে জাগতে দেখব। এখন সেই মুহূর্তটা পাচ্ছি না বলে, নস্টালজিয়ায় (স্মৃতি-কাতরতা) ভুগছি। যখন-যেখানে যাই ঘটুক, তোমাকে পাশে পেতে চাই। আমি অদ্ভুত অনুভব করছি, তোমাকে ভালোবাসি।
এর আগে প্রথম অভিযোগ ওঠার পর ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেন আলভেজ, পরে তার আপিলও খারিজ করা হয়। ব্রাজিল জাতীয় দল ছাড়াও বার্সেলোনা, পিএসজি ও সেভিয়ার হয়ে উজ্জ্বল ফুটবল ক্যারিয়ার ছিল তার। ছিলেন ক্যারিয়ারের বিদায়লগ্নে, ঠিক সেই সময়েই এক ভুলে তছনছ আলভেজের জীবন। ভরণপোষণ দিতে না পারার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী জোয়ানা সাঞ্জ। দুই মামলায় অভিযুক্ত আলভেজের ব্যাংক-হিসাবও লেনদেন থেকে তখন বিরত থাকতে হয় আদালতের নির্দেশে। শেষমেষ ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ নেইমার জুনিয়রের মহানুভবতায় আলভেজ ভুক্তভোগীকে দেড় লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন।
৪০ বছর বয়সি এই ফুটবলারের ক্যারিয়ার ছিল অনেকগুলো ট্রফিতে মোড়ানো, বিশেষ করে ক্লাব ফুটবলে। ক্যারিয়ারের একেবারে শেষদিকে এসে আলভেজ মুদ্রার সম্পূর্ণ উল্টোপিঠ দেখলেন। যদিও শুরু থেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন তিনি। অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে কঠিন শাস্তিই পেতে হলো। তবে তার আইনজীবী জানিয়েছেন— রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।