মে ৯, ২০২৪

সর্বশেষ সংঘর্ষে, পুলিশ নথিতে বলা হয়েছে যে বিক্ষোভকারীরা “মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে এসে স্টেশনে ঢুকে পড়ে এবং পুলিশকে জিম্মি করে, হুমকি দেয় যে হেফাজতে থাকা লোকজনকে ছেড়ে না দিলে তারা স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দেবে।”

কলিকাতা প্রতিনিধি

আদানি গ্রুপের ৯০ কোটি ডলারের বন্দর প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন এক ব্যক্তি। তার মুক্তির দাবিতে ভারতের দক্ষিণ রাজ্য কেরালায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির ৩৬ পুলিশসহ ৮০ জন আহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

ক্রমবর্ধমান আন্দোলন আদানির বন্দর এবং ২৩ বিলিয়ন ডলারের লজিস্টিক ব্যবসার জন্য মাথাব্যথার প্রধান কারণ। ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে বন্দরের অবস্থানকে দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ব্যবসা জয়ের চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

তবে এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পকে উপকূলীয় ভাঙনের দায়ী করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের বেশিরভাগই সমুদ্র থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি এসব এলাকায় বন্দরের মতো উন্নয়ন প্রকল্প গড়ে উঠলে মৎস্যজীবীরা না খেয়ে মরবে।

বর্তমানে বিক্ষোভকারীরা প্রবেশদ্বার অবরুদ্ধ করে রাখায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ভিজিনজাম সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজ।

গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য আদালতের আদেশ সত্ত্বেও আদানির নির্মাণ যানবাহনগুলিকে বন্দরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। ফলে তাদের অনেককে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হয় এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা গ্রেপ্তারকৃতদের একজনের মুক্তির দাবিতে রবিবার রাতে স্থানীয় থানায় জড়ো কয়েকশ লোকবল নিয়ে হাজির হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। এছাড়াও পুলিশের কিছু যানবাহনের ক্ষতি হয়।

পুলিশ ঘটনাটির মামলার নথিতে বলেছে, ‘তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে স্টেশনে ঢুকে পড়ে এবং পুলিশকে জিম্মি করে হুমকি দেয় যে হেফাজতে থাকা লোকজনকে ছেড়ে না দিলে তারা স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দেবে।’

বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ছিলেন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের নেতৃত্বে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এদের মধ্যে কিছু পুরোহিতও ছিলেন বলে একজন ধর্মচারী কর্মকর্তা এবং আর্চডায়োসিসের ভাইকার জেনারেল ইউজিন এইচ পেরেরা জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি স্টেশন থেকে পাথর ছোড়া হয়েছিল।’

সর্বশেষ প্রতিবাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে আদানি গ্রুপ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। সংস্থাটি বলেছে যে বন্দরটি সমস্ত আইন মেনে চলে এবং টি উপকূলীয় ক্ষয়ের সাথে যুক্ত নয়। রাজ্য সরকারও বলেছে যে কোনও ক্ষয় প্রাকৃতিক কারণে হয়েছে।

সিনিয়র স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা এমআর অজিথ কুমার রয়টার্সকে জানান, সংঘর্ষে ৩৬ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। প্রতিবাদী নেতাদের একজন জোসেফ জনসন বলেছেন, অন্তত ৪৬ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তারা আগে বলেছে, প্রকল্পটি সমস্ত আইন মেনে চলে। এমনকি প্রকল্পের কারণে উপকূলীয় কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না বলেও দাবি করেছে।

​​ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার প্রস্তাবিত ভিজিনজাম বন্দরের কাছে একটি পুলিশ স্টেশনে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষ

সোনালি চক্রবর্তী

বাঁকুড়া  , পশ্চিমবঙ্গ 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *