মে ৯, ২০২৪

এগারো দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। আগামীকাল মঙ্গলবার (সোমবার দিবাগত রাত ১২টা) থেকে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করবেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা, নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রভৃতি। আজ রোববার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম, সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলমসহ সংগঠনের নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নৌপরিবহন শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রায় শতভাগ ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত এই শিল্প স্বল্পব্যয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। দেশের আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহন অনেকাংশেই নৌপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। অথচ নৌযান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয় সব সময় উপেক্ষিত থেকেছে।

তিনি বলেন, আমরা এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে ও সংগ্রাম করে আসছি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে দাবি মেনে নিয়ে কিছু কিছু কার্যকর করলেও অধিকাংশ সিদ্ধান্তই উপেক্ষিত বছরের পর বছর। এ কারণে ১১ দাবি নিয়ে আমাদের এই কর্মবিরতির ঘোষণা।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের দাবি
১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নাবিক কল্যাণ তহবিল ও ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন।
২. সব মালিক সমিতিসমূহকে এক প্লাটফর্মে এনে এককেন্দ্রিক সিরিয়ালে আনা।
৩. মালিক সমিতিন সঙ্গে গেজেট বহির্ভূত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিভুক্ত অমীমাংসিত দাবি পুনর্নির্ধারণ করে চুক্তি সম্পাদন।
৪. চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপদে জাহাজ রাখার জন্য শঙ্খ নদীকে পোতাশ্রয়ের উপযোগী করা, নদীর নাব্য রক্ষা, নৌপথ, নদী ও সব সমুদ্র বন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যক মার্কা-বয়া-বাতি স্থাপন, চ্যানেলে জাল পাতা বন্ধ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পাইলট সরবরাহ নিশ্চিত করা।
৫. চট্টগ্রাম চরপাড়া-জালিয়াপাড়া পর্যন্ত নাবিকদের নিরাপদে ওঠানামার জন্য কমপক্ষে ৫টি ইজারামুক্ত ঘাট ও মেরিন ড্রাইভ সড়কের চরপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকায় ২টি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন।
৬. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস নিশ্চিত করা।
৭. পরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ, মালিক কর্তৃক নিশ্চিত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া।
৮. বালুবাহী নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
৯. আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া মাস্টার-ড্রাইভার সনদ বাতিলের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা।
১০. সামুদ্রিক মৎসশিকারি জাহাজ শ্রমিকদের গেজেটের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন এবং অন্য সব দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। এবং-
১১. নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-কালোবাজারি-জাহাজ ছিনতাই বন্ধ করা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *