মে ৬, ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের নাবলুসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইসরায়েলিরা। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নাবলুসের হাওয়ারা নামক এক গ্রামে দুই ইসরায়েলিকে গুলি করে হত্যা করেন এক ফিলিস্তিনি। এ ঘটনার পর রোববার রাতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নাবলুসে ফিলিস্তিনের বাড়ি-গাড়িতে আগুন ধরিয়ে ইসরায়েলিরা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইসরায়েলিরা অন্তত ৩০০টি হামলা চালিয়েছে। এই হামলাকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ‘সুসংগঠিত হত্যাসাধন এব লুণ্ঠন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

নাবলুসের দক্ষিণ দিকের গ্রাম জাতরাতে গত রোববার সামিহ আল-আকতাস নামের ৩৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তির পেটে গুলি ছোড়ে ইসরায়েলিরা। ওই গুলিতে আহত হয়ে পরেরদিন মারা যান তিনি। ইসরায়েলিদের হাতে প্রাণ হারানো সামিহ মাত্র ৫ দিন আগে তুরস্ক থেকে ফিরেছিলেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তুরস্কে গিয়েছিলেন তিনি।

ইসরায়েলিদের হামলায় হাওয়ারা, যাতারা, বুরিন এবং আসিরা আল-কিবলিয়া গ্রামের অন্তত ৩৯০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, বেশিরভাগই আহত হয়েছেন টিয়ার গ্যাস এবং বাড়ি-গাড়িতে লাগানো আগুনের ধোঁয়া থেকে।

ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ছুরি ও রড দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলিরা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর এ আঘাতের কারণে তার মাথার খুলি ফেটে গেছে। আরেকজনের মুখে রড দিয়ে মারা হয়েছে।

হাওয়ারা গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম ওমর ইসরায়েলিদের এ তাণ্ডবকে ‘বর্বর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘গতকাল আমরা ঔপনিবেশিক বসতিস্থাপনকারীদের অপরাধের নতুন মাত্রা দেখলাম। যেখানে তারা সবকিছুতে হামলা করেছে। মানে দোকান, মানুষ, সুপারমার্কেট, বাড়ি, গাছ, গাড়ি, গাড়ির গ্যারেজ সব জায়গায় হামলা হয়েছে। তারা বাড়িতে প্রবেশেরও চেষ্টা চালিয়েছে।’

ওমর আরও বলেছেন, ‘তারা সেনাবাহিনীর দ্বারা ১০০ শতাংশ সুরক্ষিত ছিল।’

পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা গাসান ডাগলাস আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, অন্তত ৩০টি বাড়ি ও ১০০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে অগ্নিসংযোগে কেউ নিহত হননি।

তিনি বলেছেন, ‘হামলার ব্যাপকতা এবং যে কম সময়ের মধ্যে এটি হয়েছে তা অকল্পনীয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এ হীন অপরাধের ‘সহযোগী’ ছিল ইসরায়েলি সেনারা।

এদিকে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি চলার মধ্যেই সোমবার আরেক ইসরায়েলি-আমেরিকানকে গুলি করে হত্যা করেছেন এক ফিলিস্তিনি। মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় এক বন্দুকধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *