নির্বাচিত ১১ জন ও সংরক্ষিত দুই সদস্য (এমপি) নিয়েই সংসদ কাঁপাতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু আজ রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন।
নির্বাচিত ১১ জন, সংরক্ষিত মিলে ১৩ জন; এই ১৩ জন মিলে সংসদে কোন উপকার করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, যদি সংখ্যার দিকটা দেখেন গত পার্লামেন্টে অপজিশন (বিরোধী) অনেকেই ছিল। কিন্তু দিনের পর দিন সংসদ বর্জন করছে। মাসের পর মাস বছরের পর বছর বর্জন করেছে। অপজিশন লিডার (বিরোধীদলীয় নেতা) পাঁচ বছরে মাত্র ১০ দিন পার্লামেন্টে এসেছিলেন। তাই ওইরকম সংখ্যা দিয়ে লাভ কী, ১৩ জন যদি আমরা অ্যাক্টিভ (সক্রিয়) থাকি, জনগণের পক্ষে কথা বলি, সোচ্চারভাবে সাহসের সঙ্গে জনগণের মনের কথা বলতে পারি, সংখ্যাটা বড় নয়, কম সংখ্যা দিয়েও জনগণের পক্ষে কথা বলা যায়। পার্লামেন্টকে কাঁপানো যায়।
তিনি আরও বলেন, নিশ্চয় আপনারা ইতিহাস জানেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন সংসদ নেতা ছিলেন তখন একজন সংসদ সদস্যই, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদ কাঁপিয়েছলেন। মনে হয় আমরা বর্তমানে পার্লামেন্ট যারা আছি ১১ জন, একজন ছাড়া অন্যরা কয়েকবার সংসদ সদস্য ছিলেন। পার্লামেন্টে কথা বলার মত ক্যাপাসিটি (সক্ষমতা) আছে। আমরা আগে বলেছি। আশা করি, এদেশের জনগণের কথা বলা, সরকারের দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দেওয়া, সরকারের দুঃশাসন-দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠে গত পার্লামেন্ট বলেছি, এই পার্লামেন্ট নিশ্চয়ই বলবো। আমাদের ওপর জাতি ভরসা রাখতে পারে।
গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা এগিয়ে না নিয়ে জাতীয় পার্টি ধারাবাহিকতা নষ্ট করেছে—এমন বিষয় সামনে আনলে জাপা মহাসচিব বলেন, আপনি যেটা বলছেন এটা বিএনপির কথা। যারা নির্বাচনে আসেনি। আপনি কী মনে করেন, আমরা নির্বাচনে না এলে যদি দেশে নির্বাচন না হতো তাহলে কী হতো, বিষয়টি একটু চিন্তা করলে উত্তর পেয়ে যেতেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির ইতিহাস নির্বাচন বর্জন নয়। কারণ নির্বাচন ছাড়া পার্লামেন্ট রাজনীতিতে ক্ষমতা অদল-বদলের আর কোনো সুযোগ নেই। সেখানে বাংলাদেশে নির্বাচন না হলে এখানে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি কায়েম হওয়ার সুযোগ ছিল। আমি তো মনে করি, আমরা দেশের মানুষের জন্য গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সঠিক কাজ করেছি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা মনে করি গণতন্ত্রকে বাঁচিয়েছি।
এর আগে জাপার সংরক্ষিত দুই নারী আসনের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। চুন্নু বলেন, বর্তমান জাতীয় সংসদের আইন অনুযায়ী ৫০ জন সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে আমরা জাতীয় পার্টি দুটি আসন পাই। জাতীয় পার্টি পার্লামেন্টারি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি নুরুন নাহার বেগম; দুইজন আমাদের দলের পরীক্ষিত নিবেদিত পুরোনো কর্মী, তাদের এবার দলের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।