এপ্রিল ২৬, ২০২৪

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একটি আফ্রিকান স্ত্রী বাঘটি প্রায় দেড় মাস ধরে অসুস্থ থাকার পর মারা গেছে। এর আগে বাঘটিকে পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হলেও কোনো উন্নতি হয়নি।

বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে বাঘটির মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান আহমেদ। গত বছরের জানুয়ারিতে সাফারি পার্কে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছিল।

সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান আহমেদ বলেন, বাঘটির আনুমানিক বয়স প্রায় ১৪ বছর। বার্ধক্যজনিতসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দেড় মাস ধরে অসুস্থ ছিল বাঘটি। পার্কের মেডিকেল বোর্ড ও বিশেষজ্ঞ বন্যপ্রাণী চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন সে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। লিভার, হার্ট, ফুসফুস কাজ করছে না। বাঘটির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল।

বুধবার সকালে বাঘটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরের কিছু সময় আগে বাঘটি মারা যায়। মৃত বাঘের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে শরীরের বিভিন্ন অংশের নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

ময়নাতদন্ত ও নমুনা সংগ্রহ শেষে পার্কের নির্দিষ্ট জায়গায় বাঘের দেহ মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্নে ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অন্যান্য প্রাণির সঙ্গে বেশ কয়েকটি বাঘ আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে এ স্ত্রী বাঘটির গত ৬ মাস আগে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে বাঘটি খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দেয়। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাঘটি খাবার গ্রহণ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে এর চিকিৎসা শুরু করা হয়। পরবর্তীতে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত বাঘটি অল্পঅল্প খাদ্য গ্রহণ শুরু করে। কিন্তু ৭ মার্চ থেকে আবারও খাবার বন্ধ করে দেয় বাঘটি।

পার্ক সূত্র জানায়, রাজধানীর কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের সাবেক প্রধান ভেটেরিনারি অফিসার এবিএম শহীদুল্লাহ সরেজমিন অসুস্থ বাঘটিকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বাঘটির মৃত্যু হয়েছে।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সাফারি পার্কে মোট ৮টি বাঘ আছে। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি স্ত্রী ও তিনটি পুরুষ। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির ১টি সাদা রঙের বাঘও আছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *