এপ্রিল ২৪, ২০২৪

স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়াকে খণ্ড-বিখণ্ড করতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের তৎপরতা প্রতিহত করতে যুদ্ধ ব্যতীত আর কোনো পথ খোলা ছিল না।

মঙ্গলবার রাজধানী মস্কো থেকে প্রায় ৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে ব্যুরিয়েশিয়া শহরের উড়োজাহাজ কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পুতিন। সেখানে দেওয়া এক ভাষণে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর চলমান সামরিক অভিযান নিয়ে বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পশ্চিমারা রাশিয়াকে খণ্ড-বিখণ্ড করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তাদের তৎপরতা এখনও বন্ধ হয়নি।’

‘ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের একমাত্র কারণ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে রাশিয়ার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখা। আঞ্চলিক নেতৃত্ব অর্জন বা ভূরাজনৈতিক কোনো লক্ষ্য পূরণের জন্য সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে না।’

‘আমরা রাশিয়াকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, আমাদের শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা চাই। আর এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখা।’

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ হারানোর পর রাশিয়াকে ‘শিক্ষা’ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ব্যাপক ঘনিষ্টতা শুরু করে ইউক্রেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্যও তৎপরতা শুরু করে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রে এসব কর্মকাণ্ডে উদ্বেগে পড়ে রাশিয়া। কারণ ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হলে দেশটির ভূখণ্ডে এবং কৃষ্ণ সাগর- আজভ সাগর অঞ্চলে ন্যাটোর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর তৎপরতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে, এবং এটি রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, সরকারি ও বিরোধীদলীয় অধিকাংশ রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মকর্তারা এমনটাই বিশ্বাস করেন।

বুধবারের ভাষণে পুতিন বলেন, ‘পশ্চিম আসলে ইউক্রেনকে নিজেদের অশুভ লক্ষ্য পূরণের ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ইতোমধ্যে তারা কৌশলগতভাবে পরাজিত হয়েছে। সামরিক অভিযান শুরুর পর তারা একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।’

‘তারা ভেবেছিল, এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে ২-৩ সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে, কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, বেকারত্ব বাড়তে থাকবে, সড়কে-মহাসড়কে জনবিক্ষোভ শুরু হবে এবং এসব দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট অস্থিরতায় রাশিয়া খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাবে।’

‘কিন্তু সেসবের কিছুই ঘটেনি। বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় রাশিয়ার অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব এখন অনেক দৃঢ়। আসলে রাশিয়ার স্থিতিশীলতার মৌলিক ভিত্তিগুলো কতটা দৃঢ়, সে সম্পর্কে পশ্চিমাদের কোনো ধারণাই নেই,’ বলেন পুতিন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *