ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪

এনবিআর থেকে বেআইনিভাবে নিয়োগ দেওয়া বিদেশি শ্রমিকদের তথ্য চেয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে এনবিআর। পরবর্তীতে দেশে বেআইনিভাবে কর্মরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সূত্র জানায়, দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক বিদেশি কর্মরত রয়েছেন। এদের অনেকেই বেআইনিভাবে এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এভাবে কোনো বিদেশি কাজ করতে পারেন না। বিষয়টি সুস্পষ্ট দেশের বিদ্যমান আইনের পরিপন্থি।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বিদেশিদের ভিসার স্ট্যাটাস এবং তাদের নিয়োগ করা আন্তর্জাতিক কর্মী ও কর্মকর্তাদের সংখ্যা জানতে চেয়েছে। একই সঙ্গে ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কেউ কাজ করছেন কিনা সেটাও জানাতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, এই ভিসার অধীনে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বেশকিছু কর্মী নিযুক্ত থাকায় এনবিআর তাদের কর জালে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি। তাই এনবিআর যাতে ওই ব্যক্তিদের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে পারে সেজন্য নিয়মানুযায়ী ওসব বিদেশিদের নাম আগামী ২৯ অক্টোবর রাজস্ব আদায়কারী বিভাগে রেজিষ্ট্রি করতে বলা হয়েছে।

এনবিআর চিঠিতে বলেছে, ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে তাদের চলতি অর্থবছরে (২০২২-২০২৩) ১,২২,১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে।

সূত্র জানায়, এনবিআরের চিঠিটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে লেখা হয়েছে। এই চিঠির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, আমি চিঠিটি সম্পর্কে অবগত নই এবং বিষয়টির খোঁজ নেওয়ার জন্য আমি সঠিক ব্যক্তি নই। জ্বালানি খাতে কতজন বিদেশি কাজ করছেন তা আমি জানি না। এনবিআর মনে করে, যাদের করযোগ্য আয় আছে তাদেরকে অবশ্যই কর জালের আওতায় আনা উচিত।

সূত্র জানায়, বর্তমানে অবৈধভাবে বিদেশিদের নিয়োগ প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেছে, কেউ কেউ ট্যুরিস্ট, ব্যবসায়িক, আগমন ও স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসছেন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন খাতে কাজ করে করছেন। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ১৬ (বি) অনুসারে, বেআইনিভাবে নিয়োগকৃত শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা তাদের প্রকৃত করের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি কর দিতে হবে। কর আইনের ১৬৫ (সি) ধারায় অনুযায়ী অবৈধভাবে কাজ করা এই শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা জরিমানাসহ ৩ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, শুধু জ্বালানি খাতই নয়, আমরা সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি তাদের বিদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে আমাদের জানাতে। আমরা তাদের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে চাই। চিঠিতে ওই সংস্থাগুলোকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিদেশি শ্রমিকদের নিবন্ধনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উত্তরের আশায় আছি। তাদের জবাব পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...