নভেম্বর ১৯, ২০২৪

জন্ম-মৃত্যু সনদ জালিয়াতিতে জড়িত দালাল দুর্জয় ফিরোজকে ৪৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দক্ষিণ সিটির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন দুর্জয় ফিরোজ নামক জালিয়াত ওই ব্যক্তিকে ৪৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে জনৈক আনোয়ারা বেগম নামক এক নারীর স্বামী মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ায় মৃত্যু সনদের প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বসবাসরত ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ঠিকানায় জন্ম সনদের আবেদন করেন। সেজন্য তিনি একজন দালালকে ৬ হাজার টাকা দেন। ওই ব্যক্তি দক্ষিণ সিটি থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ না করে অন্য আরেক সিটি করপোরেশনের ভুয়া বর্তমান ঠিকানা দেখিয়ে সিটি করপোরেশনের একটি আঞ্চলিক অফিস থেকে ওই নারীর স্বামীর জন্ম নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করেন।

জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ পরবর্তী ভদ্রমহিলা নিয়মানুযায়ী মৃত্যু নিবন্ধন সনদের আবেদন করেন। ওই কাজ করে দেওয়ার জন্য দালাল দুর্জয়ের আরেক সহযোগী মলিকে ৯ হাজার টাকা দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন হলেও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করতে না পারায় ওই নারী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীনের দপ্তরে আসেন।

এ সময় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ওই নারীর আবেদন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখেন যে, আবেদনে প্রদত্ত ঠিকানা দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-১ এর আওতাধীন এলাকা হলেও তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন হতে সংগ্রহ না করে অন্য আরেকটি সিটি করপোরেশনের একটি আঞ্চলিক কার্যালয় হতে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছেন। ফলে আবেদনকারী দালালকে ১৫ হাজার টাকা দিলেও দীর্ঘদিন ধরে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে পারেননি।

দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদনকারীর নিকট হতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শোনেন এবং দালালকে ফোন দিতে বলেন। দালাল ফিরোজ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীনের দপ্তরে এলে জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সনদ সরবরাহে জড়িত থাকার অপরাধে দালাল দুর্জয় ফিরোজকে ৪৫ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৮ এর ২১(৩) ধারায় ফিরোজকে এই দণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে সম্পর্কে অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন বলেন, বর্তমান ঠিকানা আমার আওতাধীন এলাকায় হওয়া সত্ত্বেও ভুক্তভোগী নারীকে ভুল বুঝিয়ে ওই দালাল অন্য আরেকটি সিটি করপোরেশনে ভুয়া বর্তমান ঠিকানা দেখিয়ে সেই অঞ্চলের আঞ্চলিক কার্যালয় হতে জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ যাচাই না করে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হয়েছে। সনদ জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় দুর্জয় ফিরোজকে ৪৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মেরীনা নাজনীন আরও বলেন, আমরা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন সকল সম্মানিত বাসিন্দাদেরকে দালালের খপ্পরে না পড়ে নিজ নিজ স্থায়ী ঠিকানার উপযুক্ত প্রমাণসহ সর্বোচ্চ ৫০/১০০ টাকা ফি দিয়ে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ ও সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করছি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...