ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

সরকারের আমন্ত্রণে আজ সোমবার চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। এ সফরে থিম্পুর সঙ্গে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই করবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া দুই দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি নবায়ন করা হবে।

সমঝোতাগুলো হচ্ছে– থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।

ভুটানের রাজা ২৮ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন। সফরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অংশগ্রহণ করবেন। সফরে তাঁর সঙ্গী হচ্ছেন ভুটানের রানী ও তাঁর পরিবার, বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই ভুটান সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

সকালে বিমানবন্দরে ভুটানের রাজাকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় বিমানবন্দরে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। প্রথম দিন রাজা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এ সময়ে দুই দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হবে। সফরের প্রথম দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

২৬ মার্চ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন রাজা। এদিন রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন তিনি। এর পর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজার বৈঠকের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সফরকালে ২৭ মার্চ ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন। একই দিনে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন তিনি।

২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শনের জন্য বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি। পরে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। বাংলাদেশ ছাড়ার আগে সোনাহাট স্থলবন্দরে ভুটানের রাজাকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার দেবে। সেখানে তাঁকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভুটানের রাজার সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা, আইসিটি ও পর্যটন ক্ষেত্রে নিবিড়তর সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো থাকবে। এ ছাড়া কানেক্টিভিটিবিষয়ক বিভিন্ন আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগে সমন্বিত সহযোগিতা, কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট চুক্তি এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি, ভারতকে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ের ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরে বাংলাদেশে এটিই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর।

তিনি জানান, ভুটানের রাজার সফরে দেশটিকে বাংলাদেশ সরকার কিছু উপহার দেবে। এর মধ্যে আগামী বছর থেকে ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় এমবিবিএস কোর্সে বার্ষিক আসন সংখ্যা ২২ থেকে ৩০-এ উন্নীত করা হবে। এ ছাড়া প্রতিবছর ভুটানের ফরেন সার্ভিস অফিসারদের জন্য বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য দুটি আসন বরাদ্দ করা হবে। এর বাইরে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দেবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...