

দেশের বৃহৎ শিল্পগ্রুপ বেক্সিমকোর বিরুদ্ধে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ কমিশনের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে ১৮টি কোম্পানির মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করা হয়েছে।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছেন। ডিআইজি কুসুম দেওয়ান বলেছেন, বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ক্ষতি।
প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী, বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস এবং এসেস ফ্যাশনের মাধ্যমে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলার করে পাচার হয়েছে।
সিআইডির তথ্য অনুসারে, বেক্সিমকো গ্রুপ স্থানীয় ঋণ নিয়ে রপ্তানি মূল্য ফেরত আনেনি এবং ঋণ পরিশোধেও ব্যর্থ হয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে একটি প্রথাগত জালিয়াতির ঘটনা, বলেছেন সিআইডির একজন কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে যে সালমান এফ রহমান পাচার করা অর্থ বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন, বিশেষ করে দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যের আবাসন খাতে। তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান সৌদি আরবে একটি বড় ওষুধ কোম্পানি খুলেছেন, যেখানে অধিকাংশ অর্থ বাংলাদেশের।
সিআইডির বিশেষ সুপারেন্টেন্ড মোহাম্মদ বসির উদ্দিন জানান, তারা বর্তমানে ৭টি ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন, যেখানে বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, গ্রুপটি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে অন্তত ২১ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
এই ঘটনায় সালমান এফ রহমান গত ১৩ আগস্ট থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন এবং তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিআইডি বলছে, আমরা সঠিক তথ্য পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
দেশের অর্থনীতির জন্য এই ধরনের ঘটনা উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এর মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং বিনিয়োগের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।