লাল-সবুজের পতাকা হাতে স্কাইডাইভ করে সম্প্রতি অনন্য রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী। আশিকের এই দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা সফল করতে স্পন্সর হিসেবে পাশে ছিল দেশের অন্যতম গ্রাহকপ্রিয় ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি)। বিশ্বরেকর্ড গড়ার গৌরব উদযাপনে রবিবার (০৯ জুন) নিজেদের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস মিট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইউসিবি।
প্রেস মিটে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ কাদরী সহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা এই বিরল সম্মান অর্জনের পেছনে আশিক চৌধুরীর অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর নির্ভীক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। উল্লেখ্য, রেকর্ড গড়ার উদ্দেশ্যে গত ২৫ মে ৪১,৭৯৫ ফুট উচ্চতা থেকে “হাই অল্টিচ্যুড লো ওপেনিং” (হেলো) স্কাইডাইভ করেন আশিক। বিশ্বে অ্যারোনটিক্যাল রেকর্ডের স্বীকৃতি দানকারী প্রধান সংস্থা এফএআই ওয়ার্ল্ড এয়ার স্পোর্টস ফেডারেশনের একজন বিজ্ঞ বিচারক আশিকের স্কাইডাইভটি পর্যবেক্ষণ করেন। স্কাইডাইভিংয়ের সময় আশিকের হাতে থাকা বাংলাদেশের পতাকাটির মাপ ছিল প্রায় ৭ বর্গফুট, যা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে এযাবৎ ওড়ানো সবচেয়ে বড় পতাকা।
রেকর্ড গড়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে পাইপার পিএ-ফরটি টু মডেলের একটি বিমান থেকে ঝাঁপ দেন আশিক। দেশের পতাকা হাতে প্রায় তিন মিনিট পর্যন্ত তিনি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই নেমে আসেন। ঝাঁপ দেয়ার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি ঘন্টায় ৩১৪ কিমি’র সর্বোচ্চ গতি (ভার্টিকাল স্পিড) লাভ করেন। ভমোট ৩৭,২৯০ ফুট উচ্চতা অতিক্রমের পর অবশেষে ৪,৪৯৮ ফুট উচ্চতা থেকে তিনি প্যারাসুট ব্যবহার করে নিরাপদে অবতরণ করেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে এখনো পর্যন্ত এটিই বিশ্ব রেকর্ড। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য আশিকের ডাইভ সংক্রান্ত সকল তথ্য ইতোমধ্যে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইউসিবি পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ কাদরী বলেন, “নিজেদের সক্ষমতাকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে আরো বেশি সফল ও দক্ষ হিসেবে গড়ে ওঠার সংস্কৃতিই ইউসিবি’কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই যাদের ভেতর বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার এবং দৃষ্টান্ত গড়ার সত্যিকার স্পৃহা রয়েছে, আমরা সবসময়ই তাদের পাশে দা্ঁড়াতে আগ্রহী। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেয়ার জন্য আশিকের প্রতি অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইল”।
নিজের অর্জনকে দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি উৎসর্গ করে আশিক চৌধুরী বলেন, “জাতি হিসেবে আমরা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অসংখ্য উদাহরণ তৈরি করেছি। বিশ্বরেকর্ডের গৌরব আমি এই দেশ ও দেশের মানুষের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে চাই, যারা আমাকে স্কাইডাইভে অনুপ্রাণিত করেছেন। হাজারো ফিটের উচ্চতায় দেশের পতাকা জড়িয়ে ধরার যে গর্ব, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এই প্রচেষ্টায় পাশে থাকার জন্য ইউসিবি’র প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই”।
ভবিষ্যতে দেশের তরুণদের এমন আরো অকুতোভয় প্রচেষ্টা ও অনন্য মাইলফলক অর্জনের যাত্রায় শতভাগ সহযোগিতার আশ্বাস ব্যক্ত করে আয়োজন সমাপ্ত করে ইউসিবি।